রান্নাঘরের অতিপরিচিত উপাদান হচ্ছে হলুদ। এটি কমবেশি সব তরকারিতেই ব্যবহার হয়ে আসছে। তরকারিতে স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি এর স্বাস্থ্য উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না।
অনেক যুগ আগে থেকেই হলুদ প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। শুধু হলুদের পানি খেলেও তা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে এবং মৌসুমি ঠাণ্ডা-জ্বর দূর করতে সহায়তা করতে পারে।
১. বাতের ব্যথা কমায় বাতের ব্যথা বা জয়েন্টে ব্যথা এখন নারীদের একটু বয়স হলেই এটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে এটি আপনার বাতের ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস হলুদ পানি খেলেই আপনি পেতে পারেন উপকার।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে হলুদে থাকা কারকিউমিন আপনার বিভিন্ন রোগকে দূরে রাখতে সাহায্য করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া হলুদের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকায় এটি সামগ্রিক স্বাস্থ্যেকে ভালো করে তোলে। আর এর ফ্রি র্যাডিক্যাল ক্ষতি রোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধ করে।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক বিষয় হচ্ছে পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখা। আর আপনার খাদ্যতালিকায় নিয়মিত হলুদ পানি যোগ করলে তা হজমশক্তির উন্নতি ঘটতে পারে। এটি আপনার বিপাককে আরও বাড়িয়ে দেয় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৪. ত্বকের জন্য উপকারী হলুদে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। নিয়মিত হলুদ পানি খেলে তা আমাদের ফ্রি র্যাডিক্যাল ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আর এটির কারণে আপনাকে কম বয়স্ক দেখাতে পারে। এটি নিয়মিত খেলে তা ত্বককে তরুণ এবং উজ্জ্বল রাখতে পারে।
৫. শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ আমরা আমাদের খাদ্য, পরিবেশ এবং বাতাসের মাধ্যমে প্রতিদিন বিভিন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ গ্রহণ করে ফেলি। আর এগুলো আমাদের অসুস্থ করে তুলতে পারে। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে এসব বর্জ্য অপসারণ করা জরুরি। আর প্রতিদিন এক গ্লাস হলুদ পানি খেলে তা শরীর থেকে বর্জ ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে সাহায্য করে।
হলুদ পানি তৈরি করাও অনেক সহজ। এর জন্য বিশুদ্ধ পানি ১-২ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে তাতে কয়েক চিমটি গুড়া হলুদ যোগ করুন। এর পর সেটি ছেঁকে নিয়ে হালকা গরম গরম পান করলেই পাবেন উপকার। আর স্বাদ বাড়িয়ে নিতে এতে সামান্য মধু যোগ করে নিতে পারেন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন