কাজের মধ্যে হঠাৎ প্রচণ্ড গরম লেগে ঘেমে-নেয়ে অস্থির। অফিসে মিটিংয়ে, ক্লাসে কিংবা বাড়িতে রান্না বা অন্য কাজের মধ্যে হঠাৎ মনে হলো যেন গরমে গায়ে জ্বালা শুরু হচ্ছে। কখনো তো মুখ-কানও লাল হয়ে যায়। নারীদের এ সমস্যার নাম হট ফ্লাশ। মেনোপজ বা মাসিক বন্ধ হওয়ার দু-এক বছর আগে থেকে হট ফ্লাশ শুরু হতে পারে। টানা ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এ সমস্যা। নারীদের দিনে ৫ থেকে ১০ বার আকস্মিক হট ফ্লাশ হতে পারে। এর বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে।
৪০ থেকে ৪৫ বছর বয়সের পর থেকে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে আসাই হট ফ্লাশের কারণ। মেনোপজের পর তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। কারও যদি কোনো কারণে অস্ত্রোপচার করে জরায়ু বা ডিম্বাশয় অপসারণ করতে হয়, তাহলে তাঁদের এ সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ, এতে হরমোনের মাত্রা দ্রুত কমে যায়। হট ফ্লাশ থেকে পরিত্রাণ পেতে কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে আসতে হবে।
■ হালকা রঙের পাতলা সুতি কাপড়ের পোশাক পরে বাইরে যাবেন। ভারী কাপড়চোপড়, অতিরিক্ত মেকআপে গরম লাগার অনুভূতি বাড়াবে।
■ চা-কফি, স্যুপসহ গরম ও মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রচুর পানি পান করুন। শীতল ও কম তেল-মসলার খাবার খান। প্রচুর সালাদ ও সবুজ শাকসবজি খান।
■ খুব গরম লাগলে একটু বরফ মুখে নিয়ে চিবুতে পারেন। তবে কোমল পানীয় এড়ানোর চেষ্টা করুন।
■ অফিসে কিংবা বাড়িতে কাজের সময় খোলামেলা বাতাসযুক্ত জায়গায় বা ফ্যানের নিচে বসুন।
■ সয়া, কালিজিরা, ছোলা, ডালজাতীয় খাবারে প্রাকৃতিক ফাইটো ইস্ট্রোজেন আছে। এগুলো খেলে একটু উপকার পাওয়া যায়। তুলসী চা পান করাও আরামদায়ক।
■ নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
■ মানসিক চাপ ও উদ্বেগ এড়ানোর চেষ্টা করুন। এ ক্ষেত্রে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন কার্যকরী।
■ চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন সাপ্লিমেন্ট, সিনথেটিক ইস্ট্রোজেন বা ক্লোনিডিন, অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্ট ডুলেক্সেটিন-জাতীয় ওষুধ সেবন করতে পারবেন। তবে এগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক। কাজেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনোমতেই এগুলো সেবন করা যাবে না।
ডা. তানজিনা হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন