বাসন-কোসন দাগমুক্ত রাখা থেকে শুরু করে ফুল তরতাজা রাখা ইত্যাদি নানা কাজে আপনার পরম বন্ধু হয়ে উঠতে পারে এটি!
রান্না-বান্না ছাড়াও সংসারের বিভিন্ন কাজে লাগতে পারে ভিনেগার। বাসন-কোসন দাগমুক্ত রাখা থেকে শুরু করে ফুল তরতাজা রাখা ইত্যাদি নানা কাজে আপনার বন্ধু হয়ে উঠতে পারে এটি! জেনে নিন সংসারের কাজকর্ম সারতে কীভাবে কাজে লাগাতে পারবেন ভিনেগার।
১. দাগ তুলতে ভিনেগার দারুণ কাজ দেয়। কালির দাগ তুলতে দু’ভাগ দুধের সঙ্গে একভাগ ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণে দাগলাগা জায়গাটি সারারাত ভিজিয়ে পরের দিন ধুয়ে ফেলবেন। দাগ উঠে যাবে।
২. সাধের কার্পেটে অ্যালকোহল, কোল্ড ড্রিঙ্কস কিংবা কফি পড়ে গিয়েছে? চারভাগের একভাগ ভিনেগার আর বাকিটা পানি মিশিয়ে দাগের ওপর স্প্রে করুন। এরপর ভিজে তোয়ালে দিয়ে জায়গাটি ঢেকে ওপর দিয়ে আয়রন করে নিন। দেখবেন, দাগ উধাও!
৩. ওয়াশ বেসিন বা কিচেন সিঙ্কে পানির দাগ তুলতে ভিনেগারে ডুবিয়ে রাখুন। সারারাত ভিজিয়ে রাখলে পরদিন দাগ উঠে যাবে। ঝাপসা হয়ে যাওয়া পানির গ্লাসেও এই একই পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন।
৪. কাচ পরিষ্কার কাজে লাগান ভিনেগার। আধ লিটার পানিতে পাঁচ থেকে ছয় টেবিল চামচ ভিনেগার মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। জানলার কাচ, শোকেসে এই মিশ্রণ স্প্রে করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। কাচ ঝকঝক করবে!
৫. শখ করে চুইংগাম খেতে গিয়ে জামায় আটকে গিয়ে বিপত্তি? আগেই ড্রাই ক্লিনারের কাছে না ছুটে কাজে লাগান একটি সহজ টিপস। এককাপ গরম ভিনেগারের মধ্যে একটি টুথব্রাশ ডুবিয়ে স্ক্রাব করুন ওই জায়গাটি। দেখবেন চুইংগাম উঠে যাবে।
৬. আঠা লাগানো স্টিকার তোলাও খুব সহজ কাজ নয়। স্টিকার লাগা জায়গাটিতে অল্প ভিনেগার দিন। পাঁচ মিনিট রেখে দিন। স্টিকার আপনা থেকেই উঠে আসবে।
৭. ফুলদানিতে অনেকদিন পর্যন্ত ফুল তরতাজা রাখতে এক লিটার পানির সঙ্গে দুই টেবিল চামচ ভিনেগার, এক চা চামচ চিনি মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ফুলদানিতে পানির বদলে এই মিশ্রণটি দিয়ে রাখলে ফুল তরতাজা থাকবে।
৮. ডিম ছাড়াতে সমস্যা হলে ডিম সেদ্ধ করার সময় পানিতে ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এতে ডিম সহজেই ছাড়ানো যাবে। আবার আলু সেদ্ধ করার সময়ও জলের মধ্যে একটু ভিনেগার মিশিয়ে নিলে আলু সহজেই সেদ্ধ হবে আর কোণাগুলোও ফেটে যাবে না।
৯. আজকাল শাক-সবজিতে বহুল পরিমাণে রং, কীটনাশক ব্যবহৃত হয়। তাই সবজি রান্না করার আগে শুধু পানিতে ভিজিয়ে না রেখে ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। মোটামুটি ৪ লিটার ঠাণ্ডা পানিতে ৪ টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে সবজি ভিজিয়ে রাখুন। সবজির মধ্যে থাকা ময়লা, কীটনাশক, পোকা-মাকড় দূর করতে এটি খুব উপযোগী।
১০. ফ্রিজে রাখা মাংস তো জমাট বেঁধে থাকলে এক কাপ ভিনেগার ঢেলে দিন। সাধারণ তাপমাত্রায় চলে আসবে। এছাড়া, ভিনেগার মাংসের কানেকটিভ টিস্যুগুলিকে ভেঙে মাংস নরম করে দেয়। ফলে রান্না করতে সুবিধে হয়।
১১. কেচআপ ফুরিয়ে আসলে বোতলের নিচে জমে থাকে। এক্ষেত্রে সামান্য হোয়াইট ভিনিগার বোতলে ঢালুন। স্বাদের কোনওরকম হেরফের না টিয়েই কেচআপ সহজে বেরিয়ে আসবে।
১২. সবজি রান্না করার করার সময় রান্নার পানির সঙ্গে এক টেবিল চামচ ভিনেগার যোগ করুন। সবজির রং সুন্দরভাবে বজায় থাকবে।
১৩. অনেক সময় মাছ বা মাংস ধোয়ার পর হাতে আঁশটে গন্ধ হতে পারে। একবাটি পানিতে সামান্য ভিনেগার মিশিয়ে কিছুক্ষণ হাত ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। আঁশটে গন্ধ দূর হবে।
১৪. দীর্ঘদিন ব্যবহার করার ফলে পানির বোতলের নিচে হলদেটে ভাব দেখা দেয়। বোতল পরিষ্কার করার জন্য বোতলে দু’থেকে তিন টেবিল চামচ ভিনেগার ঢেলে সারারাত রেখে দিন। সকালে বোতলে খানিকটা পানি ঢেলে কয়েকটি চাল যোগ করুন। এবার কিছুক্ষণ ভাল করে ঝাঁকিয়ে নিয়ে ধুয়ে ফেলুন। বোতল ঝকঝক করবে!
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন