তিতকুটে স্বাদের জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি থেকে দূরে থাকেন। কিন্তু শরীরে পুষ্টিগুণ বাড়াতে উদ্ভিজ্জ তিতা খাবারের তুলনা নেই। এসব খাবারে থাকা নানা উপাদান ক্যান্সার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ছাড়াও চোখ, লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যেমন-
করলা : গবেষণা বলছে, নিয়মিত ২ হাজার মিলিগ্রাম শুকনো, গুঁড়া, সিদ্ধ, রস কিংবা রান্না করলা খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এছাড়া এর অ্যান্টিব্যাক্টিরিয়াল গুণ শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।
ফলের খোসা : বিভিন্ন ধরনের সাইট্রাস ফলের পাশাপাশি এর খোসাও অনেক উপকারী। তিতা হলেও লেবু, কমলা, জাম্বুরার মতো ফলের খোসা স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ফ্ল্যাভনয়েড শরীরের প্রদাহ কমায়। সেই সঙ্গে শরীর ডিটক্স করতে সহায়তা করে।
নিমপাতা: প্রাকৃতিক ভাবেই নিমপাতা জীবাণুনাশক। ত্বকের নানা অসুখ দূর করতে ও জীবাণুনাশক হিসেবে এ পাতা যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। স্নায়বিক সমস্যা সারাতে এবং ক্ষুদ্রান্তে ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণ প্রতিরোধেও নিমাপাতা ভূমিকা রাখে।
মেথি: মেথি শাক আর মেথির দানা দুটিই তিতা স্বাদের। তবে এদের গুণের তুলনা নেই। এ গুলোতে থাকা বিভিন্ন খনিজ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে শরীরে অম্লের ভাব কমাতেও ভূমিকা রাখে। মেথি ও মেথি শাক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। চুলের পুষ্টি জোগাতেও সাহায্য করে মেথি।
সজনে ফুল: সজনে ফুল ঋতু পরিবর্তনজনিত রোগ সারায়। সেই সঙ্গে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, সর্দি-জ্বরের উপশমে ভূমিকা রাখে। প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম থাকায় প্রসূতি মায়ের জন্যও এ ফুল উপকারী।
গ্রিন টি : কেটেকিন এবং পলিফেনল থাকায় গ্রিন টি বেশ তিতকুটে স্বাদের হয়। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, এতে থাকা অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত গ্রিন টি খেলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে।
কফি : তিতা স্বাদের কফি স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডায়াবেটিস ও হদরোগের ঝুঁকি কমায়
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন