যাঁরা ডায়েট করছেন, তাঁদের পছন্দের অনেক খাবারই বর্জন করতে হয়। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস মেপে খাওয়া আর মুখরোচক খাবার বর্জন করে চলা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় একসময়। তাই যাঁরা ডায়েট করেন, তাঁরা প্রতি এক–দুই সপ্তাহে একবার ডায়েটের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাঁদের পছন্দের এক–দুটি খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে পারবেন। এই খাবারকেই বলা হয় চিট–মিল।
অনেকেই একে চিট-ডে বলে ভুল করে থাকেন; কারণ, ওই দিন কিন্তু আপনি আপনার পছন্দের খাবার খেতে পারবেন না। শব্দটি হবে চিট–মিল। অর্থাৎ সেই দিনটিতে আপনি আপনার দৈনন্দিন তালিকার বাইরেও পছন্দের দু-একটি খাবার একবারই খেতে পারবেন। ব্যক্তির ওজন কমানোর লক্ষ্যে ও শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে চিট–মিলের সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে।
ডায়েট চলাকালে অ্যান্টি-স্টারভেশন হরমোন লেপটিনের (রুচি ও তৃপ্তি নিয়ন্ত্রণকারী) পরিমাণ কমতে থাকে এবং অন্যান্য হরমোনেও অসমতা দেখা দেয়। তাই সপ্তাহে একবার চিট–মিল রাখলে শরীরে লেপটিনের পরিমাণ বাড়ে, যা সামগ্রিক বিপাকের হার বাড়ায়। অর্থাৎ বিপাকের সঙ্গে জড়িত সব হরমোনের মধ্যে সমতা তৈরি হয়, ইনসুলিন নিঃসরণে ভারসাম্য রক্ষা হয়, শরীরে গ্লাইকোজেনের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত শক্তি তৈরি হয়।
সাধারণত আমাদের মস্তিষ্ক শরীরের সব চর্বিযুক্ত কোষকে সিগন্যাল দেয় ফ্যাটি অ্যাসিডগুলোকে রক্তে নিঃসরণের জন্য। মাংসপেশি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুস রক্ত থেকে এসব ফ্যাটি অ্যাসিড সংগ্রহ করে কাজে লাগায়। চিট–মিল এই সামগ্রিক ফ্যাট টর্চিং প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে ফ্যাটকে কাজে লাগায়। অনেকে আবার চিট–মিলে উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবার নেন। এতে নিষিদ্ধ খাবারগুলোর প্রতি আকর্ষণ অনেক বেড়ে যায়। ফলে ডায়েটের দিনগুলোয় নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও কষ্টকর হয়ে যায়।বিজ্ঞাপন
চিট–মিলের সর্বোচ্চ সফলতা কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন চিট–মিল মাসে কতবার ও কোন সময়ে নিতে হবে, কী ধরনের খাবার রাখতে হবে, পরিমাণ কতটা হবে, এই খাবার নেওয়ার আগে ও পরে করণীয় কী—এসব বিষয়ে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। খুব বেশি ক্ষুধার্ত অবস্থায় চিট–মিল খাওয়া ঠিক নয়। চিট-মিল নেওয়ার এক-দুই ঘণ্টা আগে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ খাবার ও সবুজ সালাদ খেয়ে নিতে হবে। চিট-মিলে ট্রান্সফ্যাট ও লিকুইড সুগারসমৃদ্ধ খাবার রাখা যাবে না। এই খাবার খাওয়ার পর পর্যাপ্ত কুসুমগরম বা লেবুপানি পান করতে হবে। কখনো দাওয়াত বা খাবারের অন্য কোনো অনুষ্ঠানে থাকলে সেদিনের খাবারকে চিট-মিল হিসেবে ধরে নিতে হবে। তবে আপনার ডায়েটের উদ্দেশ্য ও ধরন অনুযায়ী চিট-মিল মাসে কয়টা হবে, তা একজন পুষ্টিবিদই নির্ধারণ করে দেবেন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন