বর্তমানে ডায়াবেটিসের সমস্যায় অনেকেই ভুগছেন। হাজারও চেষ্টা করে রক্তে শর্করার মাত্রা বশে আনা যায় না অনেক সময়। এজন্য নিয়মিত ডায়াবেটিসের ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণ করেন অনেক রোগীই। জানলে অবাক হবেন, জাদুকরী এক পাতাই ডায়াবেটিস বশে রাখবে। তুলসি পাতা সত্যিই এক জাদুকরী পাতা। এতে থাকা পুষ্টিগুণ শরীরের বিভিন্ন সমস্যার দাওয়াই। যুগ যুগ ধরে চিকিৎসাশাস্ত্রে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় তুলসি পাতার ব্যবহার আজও কমেনি।
তুলসি পাতা হাজারও রোগের সমাধান করে। এতে থাকা প্যানিক্রিয়াস বেটা সেলের কার্যকারণ ক্ষমতা বাড়ায়। ইনসুলিন ক্ষরণকেও প্রভাবিত করে তুলসি। নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ৬০ জনের ওপরে একটি তুলসি সংক্রান্ত সমীক্ষা চালানো হয়। টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৬০ জনকে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে বলা হয়েছিল। আর বাকি ৩০ জন ডায়াবেটিসের ওষুধ না খেয়ে দিনে ২৫০ মিলিগ্রাম করে তুলসির বড়ি খেয়েছিলেন। ৯০ দিন ধরে চলে এই সমীক্ষা। এরপর দেখা যায়, যেসব ব্যক্তিরা তুলসি খেয়েছিলেন, তাদের রক্তে শর্করা অর্থাৎ গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত আছে স্বাভাবিকভাবেই। এজন্য তারা ইনসুলিন নেননি কিংবা চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধও খাননি। শুধু তুলসি খেয়েই ভালো আছেন তারা।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে তুলসি খাবেন কীভাবে?
১) তুলসি চা বানিয়ে খেতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে গরম পানিতে কয়েকটি তুলসি পাতা জ্বাল দিয়ে তুলসি চা তৈরি করে খেতে পারেন।
২) এছাড়াও রাতে কয়েকটি তুলসি পাতা ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই পানি খেলে অনেক উপকার পাবেন।
৩) যে কোনো রান্নায় তুলসি পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এতে তুলসির নির্যাস খাবারে মিশে যাবে। মোটকথা, যেভাবেই হোক তুলসি রাখুন প্রতিদিনের খাবারে।
রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে নিয়মিত তুলসী পাতার রস খুব কার্যকরী। এতে শর্করার স্তর ঠিক থাকে, যার কারণে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কম হয়। তুলসীর পাতায় স্ট্রেস কমানোর হরমোন কোর্টিসোল পাওয়া যায়। তুলসীর পাতা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
মাথা ব্যথার সমস্যায় কষ্ট পেলে রোজ তুলসী খাওয়া উচিত। গরম পানিতে তুলসীর পাতা ফুটিয়ে নিন এবং তারপর ছেঁকে নিয়ে ওই জল খেলে মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রোজ সকালে তুলসী পাতার রস খেলে অনেক অসুস্থতা থেকেই দূরে থাকা যায়। এছাড়া সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, ত্বকের নানা রোগ, হাজারো সমস্যার ঘরোয়া ওষুধ হলো তুলসী পাতা। দীর্ঘকাল ধরে ঠান্ডা লাগার ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ঘরে তুলসী মধু আদা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়, শ্বাস-প্রশ্বাসের রোগ দূর করতেও তুলসী পাতার ভূমিকা অনন্য।
সতর্কতা:
ওষুধ বাদ তুলসি পাতা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এমনকি দীর্ঘমেয়াদি অসুখ থাকলেও তুলসি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন