দেশের প্রতিষ্ঠান ও অন্য অন্য দেশের সহযোগিতায় করোনার টিকা উৎপাদন কার্যাক্রম অনেক দূর এগিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের এক সভায় টিকার উৎপাদন কার্যক্রমে জোর দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদনে জোর দিয়েছি। চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে এবং বাংলাদেশের একটি কোম্পানির সঙ্গ টিকা উৎপাদন করার কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আইন মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিও পেয়েছি।
জাহিদ মালেক বলেন, ৭ আগস্ট থেকে সাত দিনের জন্য দেশের প্রত্যেক ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে প্রায় এক কোটি টিকা দেব। সেই টিকা দিতে অনেকের সহযোগিতা লাগবে। এজন্য আজ সভা করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বাহিনীর প্রধানদের কাছে সাহায্য চেয়েছি। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামের বয়স্ক অর্থাৎ ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের অগ্রাধিকার দেব। কারণ, তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার এখন ৮০-৯০ শতাংশ। গ্রামের বয়স্করা বেশি মারা যাচ্ছেন। এজন্য টিকা গ্রামে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের হাতে সোয়া কোটি টিকা আছে। এ মাসে আরও প্রায় এক কোটি টিকা এসে পৌঁছাবে। টিকার কর্মসূচি বজায় থাকবে। যাদের এনআইডি কার্ড নেই তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকার পাশাপাশি মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে যদি সঠিকভাবে এনফোর্স করতে চাই তাহলে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে কিনা তারা মাস্ক যারা পরবে না তাদের কিছুটা হলেও জরিমানা করতে পারে। এজন্য অধ্যাদেশ লাগবে। আলোচনা হয়েছে, হয়তোবা আমরা সেদিকেও যাব।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। টিকা উৎপাদন নিয়ে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস কত দিন চলবে কেউ জানে না। এজন্য যত শিগগির সম্ভব আমাদের দেশে নিজেরা বা অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে যাতে ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারি। সেটা করা সম্ভব হলে সবাইকে ভ্যাকসিন দিয়ে দেব। তখন মৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতেৃত্বে তার টিম নিয়ে দেশে কীভাবে ভ্যাকসিন তৈরি করা যায় সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। নিজেরা না পারলে অন্য দেশের সঙ্গে যৌথভাবে চুক্তি করে ভ্যাকসিন তৈরি করব, সেই ধরনের কিছু প্রস্তাবনাও আছে, উনারা বিবেচনা করছেন। ৪/৫ মাসের মধ্যে যাতে ভ্যাকসিন দেশে উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে আমরা জোর দিয়েছি।
মোজাম্মেল হক আরও বলেন, সরকারের পুরো সক্ষমতা নিয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা (টিকা) উৎপাদন করি না। আমাদেরও ঘাটতি আছে। কিছুটা অন্যের ওপর নির্ভর করতেই হয়, এটা বাস্তবতা। চুক্তি হয়েছে প্রায় ২০ কোটির ওপরে। সেগুলো পাওয়াটা অনেক সময় নির্ধারিত সময়ে না হলে বিকল্প আমরা কি করতে পারি সেসব বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা যাতে নিশ্চিত করতে পারি যারা আশ্বাস দিয়েছে, সাপ্লাই দেবে। নগদ পয়সা দিয়েও অনেক সময় কেনা যায় না। এজন্য অন্যের ওপর নির্ভর করতেই হবে। অপপ্রচারে কেউ যাতে বিভ্রান্ত না হন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগামী এক সপ্তাহে এক কোটির বেশি লোককে টিকা দেবে। ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশনের প্রত্যেক ওয়ার্ডে ন্যূনতম দুইটি করে কেন্দ্রে, অনেক ওয়ার্ডে ৫-৭টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। যার ফলে আশা করছি কষ্ট করে ভ্যাকসিন নেওয়ার পেছনে দৌঁড়াতে হবে না। ব্যবস্থা মানুষের দোরগোরায় চলে যাবে। প্রায় ১৪ হাজার কেন্দ্রে একসাথে সপ্তাহব্যাপী ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। সেখানে বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। শ্রমজীবী মানুষ, ছোট দোকানদার, কর্মচারী, বাসের হেলপারদের এই সময়ের মধ্যে স্ব স্ব ওয়ার্ড থেকে ভ্যাসসিন নেওয়া পরামর্শ দিচ্ছি। ভ্যাকসিন না দিয়ে কেউ কোনো কর্মস্থলে আসতে পারবেন না। একজন কর্মচারীও ভ্যাকসিন ছাড়া দোকানে আসতে পারবে না। কেউ ভ্যাকসিন নিয়েছে কিনা, সেই তথ্য ওয়েবসাইটে চলে যাবে, কেউ অসত্য তথ্য দিতে পারবে না। দোকানপাট খোলার আগে ৭, ৮, ৯ আগস্ট তিন দিন সুযোগ রাখলাম। এই সময়ের মধ্যে যাতে ভ্যাকসিন নিতে পারে সেই সুযোগ দিচ্ছি। যেহেতু প্রত্যেক গ্রামে ভ্যাকসিন দেবে, তাই ভ্যাকসিন নিতে কারো কোনো সমস্যা হবে না।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন