গ্লোবাল স্টাটআপ টু এন্ট্রাপ্রেনিউর নেটওয়ার্ক (জি-সেন) – ২০২০ একটি গ্লোবাল প্রোগ্রাম যা কোরিয়ার মিনিস্ট্রি অফ জাস্টিস এর অনুমতিক্রমে কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (KPC) এবং কোরিয়া ইনোভেশন প্রোমোশন এসোসিয়েশন (KIPA) কোরিয়াতে বাংলাদেশ থেকে বিজয়ী ৫টি ব্যাচ এর ১০ জন কো-ফাউন্ডারকে ৬ মাস ব্যাপী বাংলাদেশ মার্কেট কে সামনে রেখে প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করবে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক পেটেন্ট, ডিজাইন, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক অধিকার প্রাপ্তিতে তাদের সহায়তা করা হবে। বাংলাদেশের তরুণ স্টাটআপরা যাতে করে দেশে এসে সরাসরি ব্যবসা শুরু করতে পারে তার জন্য তাদের প্রথম প্রোডাক্ট এর ওয়ার্কিং প্রোটোটাইপ তৈরিতেও কোরিয়া সর্ব প্রকার সহায়তা দিবে।
কিন্তু এই জি-সেন – ২০২০ যাদের হাত ধরে বাংলাদেশে এসেছে সেই তরুণ স্টাটআপ এবং প্রকৌশলী দম্পতি শফিউল তপন এবং তানিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশের এর শুরু টা এত সহজ ছিল না বলে জানান।
এই তরুণ স্টাটআপ দম্পতির কোরিয়া যাত্রা শুরু ২০১৭ সালে কে-স্টাটআপ গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জ (ইনটুকোরিয়া) K-Startup Grand Challenge (In2Korea) প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে। তারা বিশ্বের উন্নত দেশের স্টাটআপদের সাথে কম্পিটিশন এর দ্বারা সিলেক্ট হয়ে ২০১৭ সালে কোরিয়ায় যায় এবং Ministry of Science and ICT, Korea ও The National IT Industry Promotion Agency (NIPA), Korea এর সাহায্যে বাংলাদেশ থেকে প্রথম কোন আন্তর্জাতিক স্টাটআপ হিসাবে ৯ মাস ব্যাপী প্রোগ্রাম সফল ভাবে শেষ করে কোরিয়াতে তাদের কোম্পানি তালহাটেনিং এলএলসি (TalhaTraining LLC) প্রতিষ্টা করে।
তালহাটেনিং এলএলসি (TalhaTraining LLC), কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (KPC) এর আন্তর্জাতিক ইনোভেশন পার্টনার হিসাবে কোরিয়াতে কাজ করছে, যার এশিয়ার প্রধান হচ্ছেন তালহাটেনিং এলএলসি এর এমডি এবং সিইও শফিউল তপন। একই সাথে তানিয়া চৌধুরী কাজ করছেন আন্তর্জাতিক ইনোভেশন কনসালটেন্ট হিসাবে, জি-সেন, কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টারে। এই দম্পতি যখন জি-সেন প্রোজেক্ট এ কাজ শুরু করে তখন তারা চিন্তা করে, অন্যান্য দেশের সাথে যখন কাজ করছি তখন বাংলাদেশ কেন নয়, বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তারা তো আরও অনেক সমস্যার সমাধান করে সামনে এগোয়।
এই চিন্তা ধারা থেকেই তারা, মিনিস্ট্রি অফ জাস্টিস কোরিয়া এর সম্মতি ক্রমে, কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (KPC) এবং কোরিয়া ইনোভেশন প্রোমোশন এসোসিয়েশন (KIPA) এবং আইসিটি মিনিস্ট্রি, বাংলাদেশ এর মধ্য MoU সাক্ষর করায় ২০১৯ সালের ২৭ শে নভেম্বর এবং চুক্তি সাক্ষর করায় ২০২০ সালের ২৪ শে নভেম্বর। বাংলাদেশে ফিস এক্সপার্ট লিমিটেড (Fish Expert Limited) G-SEN এর সিলেকশন পার্টনার হিসাবে কাজ করছে।
তারই ফল সরূপ দীর্ঘ ২ বছর এর চেষ্টায় আজ, তাদেরই হাত ধরে গ্লোবাল স্টাটআপ টু এন্ট্রাপ্রেনিউর নেটওয়ার্ক (জি-সেন) – ২০২০ এর প্রথম ব্যাচ এর ৫টি বিজয়ী দল কোরিয়ায় যাত্রা শুরু করছে।
কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান জনাব শাইখ সিরাজ এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্মেদ পলক এই ৫ টি বিজয়ী দলকে, শফিউল এবং তানিয়া দম্পতির মত দেশের পতাকাকে উজ্জ্বল ভাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার পরামর্শ দেন।
আমাদের সবার শুভ কামনা এবং দোয়া থাকল এই তরুণ ৫টি বিজয়ী স্টাটআপ দল এর জন্য। একই সাথে শফিউল এবং তানিয়া দম্পতির জন্য, যারা বিদেশ গিয়েও দেশের কথা সবার আগে চিন্তা করে। এই তরুণরাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং দেশের পতাকাকে উজ্জ্বল ভাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে।
সম্প্রতি ভারত বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পর, হঠাৎ করে দেশে পেঁয়াজের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। বাংলাদেশে বাৎসরিক পেঁয়াজের চাহিদার ৪০ শতাংশ আমদানি করতে হয়, যার ৯৫ শতাংশ আসে ভারত থেকে।
সেজন্যই ভারত রপ্তানি বন্ধ করলে বাংলাদেশের বাজারে দাম বাড়ে।
একই ঘটনা ঘটে চিনি, গম, ভুট্টা, মসুর ডাল কিংবা মসলা যেসব দেশ থেকে আসে, তারা রপ্তানি বন্ধ করলেও।
যদিও, বাংলাদেশে বছরের খাদ্যশস্য ও মসলার যে চাহিদা তার প্রায় সবই দেশে উৎপাদন হয়। কিন্তু এর বাইরে একটি বড় অংশের খাদ্যশস্য ও অন্যান্য পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ।
এর মধ্যে চাল, গম, ভুট্টা, পেঁয়াজ, মসুর ডাল, ছোলা, সয়াবিন তেল, চিনিসহ নানারকম নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য রয়েছে।
আমদানিতে শীর্ষে দেশসমূহ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চার লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকার বেশি পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ।
আমদানি পণ্যের মধ্যে এক পঞ্চমাংশ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ আমদানি হয় চীন থেকে, মোট আমদানির ২৬ শতাংশের বেশি। তালিকায় এরপরেই রয়েছে ভারত, যে দেশটি থেকে মোট আমদানির প্রায় ১৫ শতাংশ আমদানি হয়।
এরপর ক্রমে সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত রয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জুলাই মাসে যে খাদ্য সামগ্রী আমদানি করা হয়েছে, তার শীর্ষ দশটি পণ্যের মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে অপরিশোধিত চিনি, পাম তেল, সয়াবিন তেল, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, আদা, মরিচ, গম, চাল, মসুর ডাল এবং পেঁয়াজ।
এছাড়া রসুন, চা, তেলবীজ এবং হলুদ রয়েছে শীর্ষ খাদ্য সামগ্রী আমদানির মধ্যে রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, ভোজ্য তেল আমদানি হয়েছে ১৪ হাজার ৪৩২ কোটি টাকার, গম ৯ হাজার ৬৪২ কোটি টাকার, চাল এক হাজার ৪৪ কোটি টাকার, তেলবীজ ৫ হাজার ৪৯২ কোটি টাকার, চিনি ৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকার, এবং তিন হাজার ৪৫৭ কোটি টাকার ডাল জাতীয় খাদ্যশস্য আমদানি হয়েছে।
বাংলাদেশে এছাড়াও ভুট্টা, শুকনো সবজি, আপেল ও সিট্রাসজাতীয় ফল এবং জাফরান ও হলুদসহ বিভিন্ন মসলা আমদানি করা হয়।
কোন্ দেশ থেকে কী আসে?
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবি’র আওতায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মধ্যে চিনি, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, মসুর ডাল, ছোলা, খেজুরসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানি করা হয়।
এর বাইরে চাল, গম এবং ভুট্টার মত খাদ্যশস্য আমদানি হয় জিটুজি মানে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সাথে বাংলাদেশের সরকারের চুক্তির মাধ্যমে, এবং ব্যক্তি উদ্যোগে।
চীন
বাংলাদেশ তার আমদানির সবচেয়ে বড় অংশটি করে চীন থেকে।
প্রধান আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে সয়াবিন তেল ও পাম অয়েল, এবং গম।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী এ বছরের জুলাইতে চীন থেকে ৮ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকার পণ্য আমদানি করা হয়েছে।
ভারত
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ভারত থেকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য আমদানি হয়।
দেশটি থেকে যেসব খাদ্য-পণ্য আমদানি হয় দেশে তার মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, সূর্যমুখী ও সয়াবিন তেলসহ ভোজ্য-তেল, চিনি, মধু, কোমল পানীয়, চিপস, বিস্কুট, চকলেট ও ক্যান্ডি জাতীয় খাবার।
বাংলাদেশে বাৎসরিক পেঁয়াজের চাহিদার ৪০ শতাংশ আমদানি করতে হয়, যার ৯৫ শতাংশ আসে ভারত থেকে।
ব্রাজিল
বিশ্বের নবম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে খাদ্য সমাগ্রীর মধ্যে গম, চিনি, মাংস এবং নানা ধরণের শুকনো ফল ও মসলা আমদানি হয়।
ইন্দোনেশিয়া
বাংলাদেশের পামতেল আমদানিতে বড় উৎস ইন্দোনেশিয়া, দেশের প্রায় ৮৫ শতাংশ পামতেল আসে এই দেশটি থেকে। এছাড়া সুগন্ধি চাল এবং মসলা আনা হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে।
আমদানি নির্ভরতা কেন কমানো যায় না?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক মনে করেন, সরকারের দেশীয় চাহিদা অনুযায়ী বছরের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয় না।
ফলে প্রতিবছরই দেশে উৎপাদনের পরেও চালের মত আবশ্যিক খাদ্যশস্যের একটি অংশ আমদানি করতে হয়।
“এক্ষেত্রে সরকারকে আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে, প্রয়োজনে প্রতিটি খাদ্যশস্যের চাহিদা হিসাব করে গবেষণা এবং বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে সরকারকে আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে।”
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনও আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথা বলেছেন।
তবে কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমকে মেনে নিয়েই সামনে এগুতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি চীনের উদাহরণ দেন।
“চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখন বাংলাদেশের সাথে চীনের শিগগির বাণিজ্যে সমতা আনা সম্ভব হবে না। কিন্তু যদি আমরা চীনের প্রয়োজন মাথায় রেখে রপ্তানি বাড়াতে পারি, তাহলে বাণিজ্য ঘাটতি কমবে।”
উত্তর-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। রাজধানী সিউল। দেশটির বৃহত্তম শহরও এটি। বিশ্বের শীর্ষ ১০টি ধনী শহরের তালিকায় সিউল একটি। সিউল কেন্দ্রীয় মসজিদের মিনার দু’টি মুসলিম স্থাপত্যের প্রতীক হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত আবহাওয়া তরমুজ চাষের উপযোগী। বীজ বোনার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম পক্ষ সর্বোত্তম। আগাম ফসল পেতে হলে জানুয়ারি মাসে বীজ বুনে শীতের হাত থেকে কচি চারা রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য পলি টানেল ব্যবহার করা যায়।
সযত্নে চাষ করলে ভালো জাতের তরমুজ থেকে প্রতি হেক্টরে ৫০-৬০ টন ফলন পাওয়া যায়।
দেশে বাল্ব পেঁয়াজের যথেষ্ট ঘাটতি থাকার কারণে পুরো বছর চাহিদা মেটানো সম্ভব বারি উৎপাদিত ‘বারি পাতা পেঁয়াজ-১’ এর মাধ্যমে। এটি বসতভিটাসহ মাঠ পর্যায়ে সারাবছর চাষ করা সম্ভব। বিদেশি জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশে চাষ উপযোগী ‘বারি পাতা পেঁয়াজ-১’ নামক উন্নত জাতটি ২০১৪ সালে মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই, বগুড়া কর্তৃক কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য উদ্ভাবন করা হয়।
গাজীপুর আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড. শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার জানান, পাতা পেঁয়াজ বাসাবাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে টবেও চাষ করা যায়। আশা করা হচ্ছে এ জাতের পাতা পেঁয়াজ চাষের মাধ্যমে একদিকে সাধারণ বাল্ব পেঁয়াজের পরিবর্তেও এটি ব্যবহার করা যাবে। অন্যদিকে সাধারণ বাল্ব পেঁয়াজের সঙ্গে সংকরায়নের মাধ্যমেও রোগমুক্ত উন্নত জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে।
তিনি জানান, পাতা পেঁয়াজ একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মসলাজাতীয় ফসল। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তা খুবই জনপ্রিয় মসলা। দেশভেদে এর নামের বৈচিত্র্যতা রয়েছে। এটি Japanese bunching onion, Salad onion, Welsh onion, Ceboule ইত্যাদি নামেও পরিচিত।
পাতা পেঁয়াজের উৎপত্তি স্থান এশিয়ায় (সাইবেরিয়া, চীন)। পাতা পেঁয়াজের প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলো হলো- জাপান, তাইওয়ান, শ্রীলংকা, ভারত, কোরিয়া, চীন, ইউরোপ, আমেরিকা ও সাইবেরিয়া। গুরুত্ব বিবেচনায় জাপানে এ ফসলটি বাল্ব পেঁয়াজের পরে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। উৎপাদনকারী দেশগুলো তাদের বসতভিটায় ব্যাপকভাবে এ পেঁয়াজের চাষ করে। এ প্রজাতির গাছের মূলত দুটি অংশ-সবুজ পাতা ও সাদা মোটা সিউডোস্টেম।
পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে পারে ‘বারি পাতা পেঁয়াজ-১’
এ জাতীয় পেঁয়াজে সাধারণ বাল্ব পেঁয়াজের (Allium cepa L.) মতো বাল্ব উৎপাদন হয় না। তবে সাদা সিউডোস্টেমের গোড়ায় বাল্বের মতো বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়। এ প্রজাতির গাছ বহুবর্ষজীবী। বীজ সংগ্রহের পর পুনরায় কুঁশি উৎপাদনের মাধ্যমে রেটুন ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। বীজ বা কুঁশির মাধ্যমে পাতা পেঁয়াজের বংশ বিস্তার হয়। এ ফসলটির কুঁশি উৎপাদনের প্রবণতা খুবই বেশি। এ প্রজাতিটি পার্পল ব্লচসহ বিভিন্ন রোগ সহিঞ্চু/প্রতিরোধী। এর পাতা ও ফুলের দণ্ড ফাঁপা। এর স্বাদ ও গন্ধ প্রায় সাধারণ পেঁয়াজের মতো।
এ প্রজাতির পেঁয়াজে এলাইল সালফাইড নামক উদ্বায়ী পদার্থের কারণেই গন্ধের সৃষ্টি হয়। এ মসলাটি রন্ধনশালায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এর মূল বা হলুদ পাতা ছাড়া ফুলের দণ্ডসহ সব অংশই বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যকে রুচিকর ও সুগন্ধপূর্ণ করে। এটি সালাদ হিসেবে কাঁচা অথবা বিভিন্ন তরকারি বা অন্যান্য খাবারের সঙ্গে সিদ্ধ করে খাওয়া যায়।
এই লিয়াজোঁ অফিসটি ২০১৮ সালে ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছিল
দুই কোরিয়ার মধ্যে চলমান সংকট আরও তীব্র হয়েছে। সীমান্তের ডিমিলিটারাইজড অঞ্চলে সেনা পাঠানোর হুমকি দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দক্ষিণের সাথে যৌথ লিয়াজোঁ অফিস উড়িয়ে দিলো উ. কোরিয়া।
স্থানীয় সময় বিকেল তিনটার কিছু আগে সেখানে একটি বিস্ফোরণের কথা নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার।
২০১৮ সালে দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার জন্য উত্তর কোরিয়ার সীমানায় একটি যৌথ লিয়াজোঁ অফিস স্থাপন করা হয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এই কার্যালয়টি খালি পড়ে ছিল।
এর আগে দুই কোরিয়ার সীমান্তে যে ‘ডিমিলিটারাইজড জোন’ রয়েছে সেখানে সেনা পাঠানোর হুমকি দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়াতে বসবাসকারী উত্তর কোরিয়ার স্বদেশত্যাগী দলগুলো যেসব প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তার জবাবে এই হুমকি।
স্বদেশত্যাগী দলগুলো বেলুন ও ড্রোন ব্যবহার করে প্রায়শই উত্তর কোরিয়া বিরোধী লিফলেট পাঠায় দেশটিতে। সেটিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
শনিবার উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আন-এর বোন কিম ইয়ো-জং বলেছেন তিনি ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনী প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
হুমকির জবাবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজই বলেছেন, তারা মার্কিন সেনাবাহিনীর সাথে একত্রে উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সীমানা থেকে তোলা ছবিতে বিস্ফোরণের পর ধোঁয়া উঠতে দেখা যাচ্ছে।
যা বলেছে উত্তর কোরিয়া
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত একটি ‘ডিলিমিলিটারাইজড জোন’ দ্বারা বিভক্ত। যেটাকে বলা হয়ে একটি অসামরিক নিরপেক্ষ অঞ্চল। ১৯৫০ সালে কোরিয়ান যুদ্ধের পর এই বিভক্তি হয়েছে।
মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী বলেছে অসামরিক অঞ্চলে সেনা পাঠানোর ব্যাপার তারা একটি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।
দেশটির সেনাবাহিনীর দপ্তর জানিয়েছে তারা ‘অতি সতর্ক’ আছেন এবং সরকারি সিদ্ধান্ত আসা মাত্রই তারা দ্রুততার সাথে তা বাস্তবায়নে প্রস্তুত রয়েছেন।
শনিবার কিম ইয়ো-জং দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে হুমকি দেয়ার পর উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর দপ্তর থেকে এই বিবৃতি এসেছে।
উত্তর কোরিয়ায় রাজনৈতিক পদমর্যাদার দিক দিয়ে খুব ক্ষমতাশালী কিম ইয়ো-জং বলেছেন, “আমার মনে হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষের সাথে নিশ্চিতভাবেই বিচ্ছেদের একটা সময় হয়ে এসেছে।”
তিনি তার বিবৃতি শেষ করেছেন যে বক্তব্য দিয়ে তা হল, “আবর্জনাকে অবশ্যই ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হয়।”
সোলে বিবিসির সংবাদদাতা লরা বিকার জানিয়েছেন যে দক্ষিণ করিয়া এই হুমকি খুব কঠোরভাবে নিয়েছে। ডিমিলিটারাইজড জোনে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট সবাইকে শান্ত হওয়ার আবেদন জানিয়ে উত্তর কোরিয়াকে সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে দুরে থাকার কথা বলেছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে ভারি অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত এলাকার একটি হলো ‘ডিলিমিলিটারাইজড জোন’।
লিফলেট বিবাদ আসলে কি?
গত সপ্তাহে পিয়ংইয়ং সোলের সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। দুই দেশের নেতার যোগাযোগের জন্য যে হটলাইন ছিল তাও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে দেশটি। উত্তর কোরিয়া থেকে দেশত্যাগী অনেকেই দক্ষিণ কোরিয়াতে বসবাস করেন।
তারা প্রায়শই সীমান্তের ওপারে বেলুনে করে উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণামূলক লিফলেট পাঠায়।
অনেক সময় রেডিও ও ইউএসবি স্টিকে করে দক্ষিণ কোরিয়ার খবর ও নাটিকাও পাঠানো হয়েছে।
এর আগে এমন কর্মকাণ্ড বন্ধ করার চেষ্টা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। তারা এসব গ্রুপকে বলার চেষ্টা করেছে যে তাদের এমন কর্মকাণ্ডের কারণে সীমান্তের শান্তি ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন নিজে উত্তর কোরিয়াকে সংলাপে ফিরে আসার আহবান জানিয়েছেন।
লিফলেট পাঠানোর ঘটনা এতদূর যেভাবে গড়াল
২০১৮ সালে দুই দেশের প্রধানের মধ্যে এক চুক্তির অংশ হিসেবে উত্তর কোরিয়া বিরোধী প্রচারণা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার উপর যে কঠোর অবরোধ আরোপ করেছে সে ব্যাপারে কোন আপত্তি না তোলাই দক্ষিণ কোরিয়ার উপর তাদের ক্ষোভ রয়েছে। তাই বিষয়টি শুধু লিফলেটের তুচ্ছ বিষয়ে সীমাবদ্ধ নয়।
ডিলিমিলিটারাইজড জোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে কিম জং আন সাক্ষাৎ করেছিলেন।
বিবিসির এই সংবাদদাতা মনে করছেন এসব কারণেই হয়ত উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াকে শায়েস্তা করতে চায়। হয়ত ভবিষ্যৎ সংলাপে বাড়িত সুবিধা নেয়ার পরিস্থিতি তৈরি করছে।
‘ডিলিমিলিটারাইজড জোন’ কি?
কোরিয়ার যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ১৯৫৩ সালে দুই দেশের সীমান্তে একটি অসামরিক নিরপেক্ষ অঞ্চল তৈরি করা হয়। এর ঐতিহাসিক কারণে এই অঞ্চলে অবস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ।
এই অঞ্চল দিয়ে উত্তর কোরিয়ার সেনাসদস্যদের দেশত্যাগ করে দক্ষিণে পালানোর ঘটনা রয়েছে। এখানে শান্তি আলোচনা যেমন হয়েছে তেমনি দুপক্ষের গুলি বিনিময়ও হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার অনেকের জন্য এই অঞ্চলটি পর্যটন কেন্দ্র। এখানেই মিলিত হয়ে হাত মিলিয়েছিলেন দুই কোরিয়ার নেতা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে এখানেই সাক্ষাৎ করেছেন কিম জং-আন।
তবে এর নাম যাই বলুক, এই ‘ডিলিমিলিটারাইজড জোন’ বিশ্বের সবচেয়ে ভারি অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত এলাকার একটি।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন