নাটোরের গুরুদাসপুরের তিনটি ইউনিয়নের ৪ হাজার ৬০০ বিঘা কৃষিজমি রয়েছে। এসব জমিতে তিনটি ফসল ফলত। কিন্তু আট বছর ধরে জলাবদ্ধতার কারণে এসব জমিতে কোনো ফসল হচ্ছে না। এসব এলাকার পানি নিষ্কাশনের নালাটি সংস্কার না করায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
রোপা আমন ধান চাষের সব ধরনের প্রস্তুতি থাকার পরও নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার প্রায় দুই হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক মাঠে নামতে পারছেন না। কারণ, মাঠের পর মাঠ ডুবে রয়েছে। ফলে রোপা আমনের পাশাপাশি রসুন চাষসহ রবিশস্য আবাদ নিয়েও শঙ্কিত চাষিরা।
জলাবদ্ধতা নিরসন ও কৃষি আবাদ নির্বিঘ্ন করার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খেতের ভেতর নেমে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা। কৃষকদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন এলাকার দুই তরুণ মো. শরীফুল ইসলাম ও মো. হাসান আলী।
দুই তরুণ জানান, উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের জুমাইনগর এলাকার ১ হাজার ১০০ বিঘা ও হামলাইকোলের ১ হাজার বিঘা এবং ধারাবারিষা ইউনিয়নের বিন্নাবাড়ি এলাকার ১ হাজার ৫০০ বিঘা ও নাড়িবাড়ি এলাকার (আংশিক) ১ হাজার বিঘাসহ ৪ হাজার ৬০০ বিঘা কৃষিজমি রয়েছে। এসব জমিতে বছরে তিনটি ফসল ফলত। এই আবাদেই এলাকার কৃষকের আর্থিক সমৃদ্ধি আসত। আট বছরের বেশি সময় ধরে এসব জমি জলাবদ্ধতায় ডুবে রয়েছে। এখন তিনটি ফসল ফলে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।
কৃষকেরা বলছেন, এসব খেতের পানি নিষ্কাশনে ৩০ বছর আগে প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি নালা তৈরি করা হয়েছিল। নালাটি জুমাইনগর-বিন্নাবাড়ি ও পাটপাড়া হয়ে সোনাবাজু নদীতে গিয়ে পড়েছে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে নালাটি পুনঃখনন কিংবা সংস্কার করা হয়নি। এখন অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া মাঝেমধ্যে কৃষিজমি খনন করে তৈরি করা হয়েছে মাছ চাষের পুকুর। এসব কারণে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানি নামতে পারে না। বছরের বেশির ভাগ সময়েই জলাবদ্ধতায় ডুবে থাকছে ৪ হাজার ৬০০ বিঘা কৃষিজমি।
জুমাইনগর এলাকায় ৩০ বিঘা কৃষিজমি রয়েছে কৃষক হাসান মোল্লার। তাঁর অভিযোগ, সব জমি হাঁটু বা কোমরসমান পানিতে ডুবে রয়েছে। সহসা পানি নামার লক্ষণ নেই। এ কারণে রোপা আমন ধানের আবাদ অনিশ্চিত। তা ছাড়া রোপা আমন তুলে রসুনের আবাদও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষক শেখ মো. চাঁদ, দেলু মোল্লা, জালাল উদ্দিন ও আবুল হোসেন অভিযোগ করেন, ছয়–সাত বছর আগেও জলাবদ্ধতার এমন দুর্ভোগ ছিল না। রোপা আমন চাষের জন্য ১৫ দিন দেরি হতো। রোপা তুলেই একই জমিতে রসুনসহ মসলাজাতীয় ফসল আবাদ করতে পারতেন কৃষক। কিন্তু ছয়–সাত বছর ধরে এক শ্রেণির প্রভাবশালী লোক খেতের মধ্য দিয়ে যথেচ্ছভাবে মাছ চাষের জন্য অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করার কারণে জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। ফলে কৃষক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। কৃষকের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের দুই হাজারে বেশি কৃষক হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত। এ সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েও স্থায়ী সমাধান মিলছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল করিম বলেন, অপরিকল্পিত পুকুর খনন ও পানি নিষ্কাশনের নালাটি বন্ধ হয়ে পড়ায় জলাবদ্ধ জমিতে আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। নালাটি পুনঃখননের জন্য বিএডিসির পানাসিকে (নাটোর পাবনা সিরাজগঞ্জ) প্রকল্প গ্রহণের জন্য বলা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য এলাকার কৃষকেরা তাঁর দপ্তরে এসেছিলেন। তাঁদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন