সাধারণত আমরা চেহারার যত্ন নিয়ে যতটা সচেতন, শরীরের অন্যান্য অংশ নিয়ে ততটা ভাবি না। অযত্ন–অবহেলায় মলিন হয়ে পড়ে শরীরের অন্যান্য অংশ। আস্তে আস্তে ছোপ ছোপ কালো দাগ পড়ে যায় এসব অংশে। এসব দাগ কিন্তু সহজে দূর হয় না। হাত ও পা এমনই একটি অংশ। চেহারার মতো হাত-পায়ের যত্ন নিয়ে আমাদের খুব একটা ভাবতে দেখা যায় না। ভাবুন তো, আপনার চেহারার সঙ্গে যদি হাত–পায়ের রং না মেলে, তবে কেমন লাগবে? হাত-পায়ের কালো দাগ দূর করতে ঘরোয়া কিছু উপায় দেওয়া হলো।বিজ্ঞাপন
অ্যালোভেরা
বহু গুণসম্পন্ন অ্যালোভেরা রূপচর্চার অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা উপাদান। স্বাস্থ্য, ত্বক ও চুলের যত্নে অ্যালোভেরার রস, জেল খুব উপকারী। অ্যালোভেরার রস ত্বকের ভেতরের কোষগুলোকে পরিষ্কার করে ও দাগ দূর করে। শসার রস কালো দাগ দূর করতে বেশ কার্যকর। প্রথমে ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরার রস নিন এবং ৩ টেবিল চামচ শসার রস মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি হাতে ও পায়ে লাগান। লাগানোর ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। চাইলে ম্যাসাজও করতে পারেন। হাত–পায়ের কালো দাগ ও রোদের পোড়া দাগ দূর করতে এটি বেশ উপকারী। তাই সপ্তাহে দুবার মিশ্রণটি হাত–পায়ে লাগিয়ে পেয়ে যান দাগবিহীন হাত ও পা। অথবা হাত ও পায়ে অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে যতক্ষণ খুশি রাখুন। ইচ্ছামতো পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। রোজ করতে পারেন এটা।
বেসন
ত্বককে পরিষ্কার করে লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে বেসনের জুড়ি নেই। বেসনের মাস্ক ব্যবহার করে আপনি পেতে পারেন সুন্দর হাত ও পা। এটি তৈরি করতে প্রথমে ২ টেবিল চামচ বেসন, ১ চা–চামচ হলুদের গুঁড়া, ২ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ বা গোলাপজল এবং তার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর হাত ও পায়ে লাগিয়ে নিন এবং ১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করলে হাত–পায়ের কালো দাগ দূর হবে।বিজ্ঞাপন
টক দই
প্রতিদিন গোসল করার আগে হাত ও পা টক দই দিয়ে ম্যাসাজ করুন। পাঁচ থেকে সাত মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। টানা এক মাস করলে ধীরে ধীরে কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর হবে। ভালো ফল পেতে দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নিন।
পাকা পেঁপে
হাত–পায়ের কালচে ভাব দূর করতে পাকা পেঁপে খুবই কার্যকর। পাকা পেঁপে রোদে পোড়া ভাব ও কালচে দাগ দূর করে। তাই হাত–পা পরিষ্কার রাখতে পাকা পেঁপেকে ভালোভাবে চটকে নিন। এবার মিশ্রণটি হাত ও পায়ে ভালোভাবে ঘষে ঘষে লাগিয়ে দিন। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ দিন পাকা পেঁপে লাগাতে পারেন, যত দিন না আপনি ভালো ফল পাচ্ছেন।
কমলার খোসা
কমলার খোসা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। কমলার খোসা ত্বকের কালচে ভাব দূর করে এবং ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করে। প্রথমে কড়া রোদে কমলার খোসা ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। খোসা শুকিয়ে গেলে ভালোভাবে পাউডার করে সংরক্ষণ করতে পারেন। ৪ টেবিল চামচ কমলার খোসার গুঁড়োর সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খুব ভালোভাবে পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার পেস্টটি হাতে ও পায়ে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্কটি হাত ও পা থেকে ময়লা দূর করে আপনাকে দেবে ফরসা ও উজ্জ্বল হাত–পা। সপ্তাহে ৩ দিন এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।
হলুদ
ত্বকের যত্নে হলুদের কোনো জুড়ি নেই। ত্বক থেকে বয়সের দাগ, রোদের পোড়া দাগ ও ব্রণের দাগ দূর করে হলুদ। হলুদগুঁড়া অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। হাত ও পায়ে পাতলা করে এই পেস্ট লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন।
টমেটো
টমেটোর রসে আছে প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান। টমেটোর রস ২ চামচ ও দুধের সর ১ চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ তুলার সাহায্যে হাত–পায়ে লাগান। ৪০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার করুন।
আলু
আলু ত্বকের রোদে পোড়া দাগ ও কালো দাগ দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। প্রথমে ১ টেবিল চামচ আলু ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। ১৫ মিনিটের জন্য মিশ্রণটি হাত ও পায়ে লাগিয়ে রাখুন। এরপর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৪ দিন ব্যবহার করে দেখুন হাত–পায়ের কালো দাগ গায়েব।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন