কাশির প্রচলিত ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া উপায়ে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। প্রাকৃতিক এসব উপাদানের মাধ্যমে কাশি উপশমের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
এলাচি
সর্দি, কাশি এবং ঋতু পরিবর্তনের জ্বর থেকে মুক্তি দিতে পারে ছোট এলাচি। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরা এলাচি জীবাণুনাশকও। এক কাপ পানি চুলায় বসিয়ে তাতে মধু এবং বেশ কয়েকটি ছোট এলাচি ছেড়ে দিন। ভালোভাবে ফুটিয়ে এলাচি ছেঁকে ওই পানিটুকু পান করুন। এভাবে কয়েক দিন খেলে কমে যাবে গলাব্যথা। রেহাই মিলবে শুকনো কাশি থেকেও। এ ছাড়া মুখে এলাচি রাখলেও শুকনো কাশির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
হলুদ
হলুদে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ লবণ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লোহা ইত্যাদি পদার্থ। তাই হলুদ খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শুকনো কাশির জন্য এটি খুব কার্যকর। ১ টেবিল চামচ হলুদের সঙ্গে ১/৮ টেবিল চামচ গোলমরিচ গুঁড়া নিয়ে সেটি চা, দুধ কিংবা অন্য কোনো পানীয় যেমন কোনো জুসের সঙ্গে মিশিয়ে খান। সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ দেয় হলুদ। কাশি কমাতে হলুদের রসও খেতে পারেন। এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে হলুদের গুঁড়া, সামান্য মাখন ও গোলমরিচ গুঁড়া মিশিয়ে খেতে পারেন।
তুলসী
শীতকালে তুলসীপাতা দিয়ে চা বানিয়ে খেলে সহজেই কাশি প্রতিরোধ করা যায়। এ ছাড়া এক গামলা ফুটন্ত গরম পানিতে তুলসীপাতা দিয়ে, মাথা টাওয়েল দিয়ে ঢেকে নিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে সেই পানির ভাপ নিলে খুব দ্রুত কাশি সেরে যায়।
আদা
আদার অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ক্ষমতার কারণে তা কাশি নিরাময়ে খুব উপকারী। এক ইঞ্চি পরিমাণ আদা কুচি করে তা পানির সঙ্গে ফুটিয়ে নিয়ে এক কাপ পরিমাণ ঘন রস তৈরি করুন। তারপর এতে দুই চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এটা কফ পাতলা করে গলা পরিষ্কার করবে, কাশি কমাবে। এসিডিটির সমস্যা থাকলে অবশ্যই মধু মিশিয়ে নেবেন।
মধু
আদা ও দারুচিনি দিয়ে চা বানিয়ে তাতে দুই চা চামচ লেবুর রস এবং দুই চা চামচ মধু দিয়ে খেলে কাশি উপশম হয়। চা খাওয়ার অভ্যাস না থাকলে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচ লেবুর রস ও দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলেও কফ পরিষ্কার হয়।
গরম পানি ও লবণ
আদা দিয়ে পানি ফুটিয়ে সেই পানি ছেঁকে নিন। এরপর তাতে সামান্য লবণ মিশিয়ে গারগল করুন। এটা করুন নিয়মিত দিনে তিন থেকে চারবার। তবে গারগল করার আধঘণ্টা আগে ও পরে কোনো খাবার খাবেন না; কম কথা বলবেন। কারও কাশি হলে এ দাওয়াই বেশ উপকার দেবে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন