ওজন কমানোর প্রসঙ্গ এলে গোল মরিচের নাম আসবেই। এটি মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে দীর্ঘকাল ধরে। বিভিন্ন ধরণের রান্নায় স্বাদ যুক্ত করতে গোল মরিচ মশলা হিসেবে বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত হয়। গোল মরিচ এক ধরনের তেল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যা বাতজনিত রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। এমনটাই প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ওজন কমানোর জন্য গোল মরিচ গোল মরিচ ভিটামিন এবং খনিজ দিয়ে বোঝাই, যা একে একটি দুর্দান্ত সুপারফুড হিসেবে তৈরি করে। এই উপাদানগুলো বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিরাময়ে সাহায্য করে। পাশাপাশি বিপাকক্ষমতা বাড়িয়ে ওজন হ্রাস প্রক্রিয়াটিকে গতিময় করে তোলে।
মশলাটি ভিটামিন এ, কে, সি এবং ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও সোডিয়ামের মতো খনিজ দিয়ে পরিপূর্ণ। এছাড়াও গোল মরিচ স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ডায়েটরি ফাইবার সমৃদ্ধ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মশলাদার খাবার থার্মোজেনিক প্রভাবের কারণে খাবার বিপাক করতে সহায়তা করে। খাবারের থার্মোজেনিক এফেক্ট বা খাবারের তাপীয় প্রভাবকে (টিইএফ) যে পরিমাণে খাদ্য গ্রহণের পরে আপনার দেহ ক্যালোরি পোড়ায় সেই হারের স্পাইক হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এটি বিশ্বাস করা হয় যে, থার্মোজেনিক প্রভাব ক্যালোরি ঝরানোর সংখ্যাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং দ্রুত ওজন কমাতে পারে।
গোল মরিচে পাইপারিন রয়েছে, এটি একটি যৌগ যা হজম এবং বিপাকীয় কার্য সম্পাদনকে উন্নত করে। এই যৌগটি শরীরে ফ্যাট জমতে বাধা দেয় এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
গোল মরিচের অন্যান্য সুবিধা: * গোল মরিচে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ফ্রি র্যাডিকালের ক্ষতিকারক প্রভাব প্রতিরোধ বা বিলম্বিত করার ক্ষমতা রাখে।
* এটি শরীরে পুষ্টির শোষণে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
* গোল মরিচের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য বাত, মৌসুমী অ্যালার্জি এবং হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য উপকারী।
* পাইপারিন মস্তিষ্কের ক্রিয়া এবং রক্তে শর্করার বিপাক উন্নত করতেও সহায়তা করতে পারে।
গোল মরিচের চা: খাবার তৈরিতে গোল মরিচ ব্যবহার করা এর পুষ্টিগুণের সুবিধা পাওয়ার সহজ উপায়। তবে খাবারে এই মশলার পরিমাণ বেশ কম থাতে। সুতরাং, এর সব সুবিধা পাওয়া সম্ভব হয় না। তাই ওজন দ্রুত কমানোর জন্য গোল মরিচের চা তৈরি করে খেতে পারেন। জেনে নিন কীভাবে তৈরি করবেন-
উপকরণ: ১/৪ চামচ গোল মরিচ ১ ইঞ্চি আদা ১ টেবিল চামচ মধু ১ টেবিল চামচ লেবুর রস ১ কাপ পানি।
যেভাবে তৈরি করতে হবে: একটি পাত্রে পানি, গোল মরিচ এবং কুচি করা আদা নিন। পানি পাঁচ মিনিটের জন্য ফুটতে দিন এবং তারপরে চুলা বন্ধ করে দিন। এক কাপে চা ছেঁকে নিয়ে তাতে লেবুর রস এবং মধু যোগ করুন। এবার পান করুন গোল মরিচের চা।
সতর্কতা: গোল মরিচ স্বাস্থ্যকর, তবে বেশি খেলে উচ্চ মাত্রায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। একদিনে ১/২ চা চামচ বেশি গোলমরিচ খাবেন না। এছাড়াও, চা সবার জন্য উপকারী না-ও হতে পারে। প্রথমবার এই চা পান করার পরে যদি খাদ্যনালী এবং পেটে জ্বালা অনুভব করেন তবে এটি এড়িয়ে চলুন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন