উপকরণ: নারকেল কোরা ১টি, চিনি, আতপ চাল (পানিতে ভিজিয়ে রেখে আধা বাটা করে রাখতে হবে) ১০০ গ্রাম, পাটালি গুড় ৫০০ গ্রাম, দুধ ১ লিটার, মাওয়া, কাজুবাদাম পরিমাণমতো ও ছোট এলাচগুঁড়া অল্প পরিমাণ।
প্রণালি: চালবাটা, গুড়, দুধ ও মাওয়া একসঙ্গে মেখে কড়াইয়ে বসাতে হবে। একনাগাড়ে নাড়তে থাকতে হবে যাতে দলা না পাকায়। হয়ে গেলে নামানোর আগে ছোট এলাচগুঁড়া, বাদামগুঁড়া ও কিশমিশ ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপর থালায় তেল বুলিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। জমে গেলে কেটে কেটে পরিবেশন করুন।
সেমাই পিঠা
উপকরণ: চালের গুঁড়া ১ কাপ, ঘি ৩ চা–চামচ, গরম পানি পরিমাণমতো, গরুর দুধ দেড় লিটার, খেজুরের গুড় (পাটালি) আধা কাপ ও এলাচ ২-৪টা।
প্রণালি: একটা পাত্রে চালের গুঁড়া, ঘি ও গরম পানি মেখে নিতে হবে। এবার এই মণ্ড থেকে সেমাই আকারে গড়ে নিন। সেমাইগুলো রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। দুধ ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ঘন হলে সেমাই ছেড়ে দিন। গুড় পানি দিয়ে ভালো করে জ্বাল দিয়ে নিতে হবে। গুড় ঠান্ডা হলে দুধের মধ্যে মিশিয়ে নিন। এভাবে গুড় মেশালে দুধ ফেটে যাবে না। এলাচিগুঁড়া মিশিয়ে একটু ঘন করে নামিয়ে ফেলতে হবে।
বিজ্ঞাপন
তোতা পুলি
উপকরণ: ছানা ১০০ গ্রাম, ময়দা ৩ টেবিল চামচ, ক্ষীর ২০০ গ্রাম, খেজুরের গুড় ৫০০ গ্রাম, খাবার রং ২ ফোঁটা, এলাচিগুঁড়া আধা চা–চামচ ও ঘি ৫০০ মিলিলিটার।
প্রণালি: প্রথমে পানি ঝরানো ছানা, ময়দা দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিতে হবে। ক্ষীর খাবারের রং দিয়ে মেখে নিন। মণ্ড তৈরি করে তা থেকে কেটে নিতে হবে। এরপর ছানার মণ্ড থেকে পুলির আকারে গড়ে নিন। চিনির রস এলাচি দিয়ে তৈরি করে রাখতে হবে। ঘিয়ে পুলিগুলো লালচে করে ভেজে নিয়ে চিনির রসে ডুবিয়ে রাখতে হবে। একটি ডিশে পুলি কেটে পরিবেশন করুন।
খেজুরের গুড়ের ডোনাট
উপকরণ: ময়দা ১ কাপ, বেকিং পাউডার ১ চা–চামচ, চিনি ১ চা–চামচ, ছানা আধা কাপ, পাটালি গুড় আধা কাপ, ইস্ট ১ চা–চামচ, নারকেল কোরা আধা কাপ, সাদা তেল ভাজার জন্য পরিমাণমতো, খেজুরের ঝোলা গুড় পরিমাণমতো, হালকা গরম পানি (ইস্ট গোলানোর জন্য আর ময়দা মাখার জন্য) ও মাওয়া আধা কাপ।
প্রণালি: প্রথমে হালকা গরম পানিতে ১ চা–চামচ ইস্ট গুলে রাখতে হবে। এবার ময়দার মধ্যে ভালো করে বেকিং পাউডার মিশিয়ে নিন। পাটালি গুড় হাত দিয়ে ভালো করে গুঁড়া করে নিন। এবার মাওয়াও গুঁড়া করতে হবে।
এরপর ময়দায় ছানা, নারকেল কোরা, মাওয়া, পাটালি গুড় ও চিনি ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। পানিতে গোলা ইস্টও ভালো করে মেশাতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় গরম পানি দিয়ে ময়দা শক্ত করে মাখাতে হবে। এতে বাটি বসিয়ে অথবা ডোনাট কাটার দিয়ে গোল আকৃতি করে কেটে নিতে হবে।
কড়াইয়ে সাদা তেল গরম করে অল্প আঁচে হালকা বাদামি রং হলে পিঠাগুলো ভাজতে হবে। ভাজা হলে তেল ঝরিয়ে খেজুরের গুড়ে ১৫ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখতে হবে। তারপর ওপর থেকে নারকেল কোরা ছিটিয়ে একটা পাত্রে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
নতুন গুড়ের সন্দেশ
উপকরণ: গরুর দুধ ১ লিটার, গুড় ২ কাপ ও গুঁড়া দুধ ১ কাপ।
প্রণালি: ১ লিটার দুধ ভালো করে ফুটিয়ে আধা লিটার করে নিতে হবে। ভালো করে নাড়াচাড়া করে একটু একটু করে গুঁড়া দুধ মেশান ভালো করে। যখন নাড়তে নাড়তে কড়াই থেকে ছেড়ে আসবে, তখন চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন। ইচ্ছেমতো নকশা করে সন্দেশ বানিয়ে নিন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন