গর্ভাবস্থা প্রত্যেক নারীর জন্যই এক নতুন চ্যালেঞ্জের সময়। এসময় অনেক রকম শারীরিক সমস্যা, হরমোনের প্রভাবে মানসিক নানা টানাপোড়েন দেখা দিতে পারে। সেইসঙ্গে থাকে নতুন একটি প্রাণ পৃথিবীতে আনার আনন্দ। গর্ভাবস্থার প্রতিটি দিন হবু মায়ের জন্য নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারে। খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনের রুটিন দেখে বোঝা সম্ভব এই অবস্থায় কোনো জটিলতা দেখা দিতে পারে কি-না।
সন্তান গর্ভে আসার পরে কিছু জটিলতা প্রায় সব নারীরই হতে পারে। একজন হবু মায়ের জন্য এ বিষয়ে ধারণা রাখা সবচেয়ে জরুরি। জটিলতাগুলো সম্পর্কে আগেভাগে ধারণা থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে। মার্কিন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের রিপোর্ট অনুযায়ী, একজন সম্পূর্ণ সুস্থ নারীও গর্ভাবস্থায় নানা শারীরিক সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে পারেন। গর্ভাবস্থায় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি সে সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান টাইমস।
মা হওয়ার আনন্দের মধ্যে দুশ্চিন্তার একটি কারণ হলো, উচ্চ রক্তচাপ। বিশেষ করে সেকেন্ড ট্রিমেস্টারের পর থেকে সন্তানের জন্ম পর্যন্ত উচ্চ রক্তচাপ এবং হাইপারটেনশনে ভোগেন অনেকেই। গর্ভের ভেতরে থাকা ভ্রূণে যথেষ্ট অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছে দেয়ার জন্য এই সময় হবু মায়ের শরীর বেশি রক্ত পাম্প করে। এই সময় সেই কারণে মাঝে মাঝে ব্লাজ প্রেশার চেক করিয়ে নেয়া প্রয়োজন এবং খাবারে লবণ কম খাওয়া দরকার।
এসময় আরেক ভোগান্তির নাম ডায়াবেটিস। তবে তা শিশুর জন্মের কয়েক মাসের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। গর্ভকালীন এই ডায়াবেটিস হবু মা এবং সন্তানের স্বাস্থ্যে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি সময়ের আগেই শিশুর জন্ম পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। এসময়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই সচেষ্ট থাকুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।
গর্ভবতী নারীর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। ফলে নানা রকম সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এসময় ইউরিনারি ট্র্যাক্ট, ব্লাডার, কিডনি এবং সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ দেখা দিতে পারে। আগে থেকে সতর্ক থাকলে সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব। এসময়ে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
প্রিক্ল্যাম্পসিয়া নামটি খুব বেশি পরিচিত না হলেও এই সমস্যায় ভুগতে পারেন অনেক হবু মা। হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিস, কিডনির সমস্যা, বেশি বয়সে গর্ভাধারণ, স্থূলতার মতো নানা কারণে প্রিক্ল্যাম্পসিয়া হতে পারে। পেটে অসহনীয় ব্যথা, মাথা ব্যথা অথবা চোখে ঝাপসা দেখার মতো সমস্যা হলে বুঝবেন আপনার প্রিক্ল্যাম্পসিয়া হয়েছে। এই সমস্যা থেকে গর্ভপাত পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। এই ধরনের সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
গর্ভধারণের সাইত্রিশ সপ্তাহ পূরণ হওয়ার আগেই যদি শিশুর জন্ম হয়, তবে তাকে প্রিম্যাচিওর লেবার বলে। প্রিম্যাচিওর লেবারের কারণে দুর্বল, অসুস্থ শিশুর জন্ম হয়। প্রিম্যাচিওর শিশুর ওজন অনেকটা কম হয় এবং বয়সের সঙ্গে ঠিকমতো বাড়ে না। এই সমস্যা এড়িয়ে চলতে হবে।
গর্ভধারণের প্রথম ২০ সপ্তাহে মধ্যে গর্ভপাত হলে তাকে বলে মিসক্যারেজ এবং ২০ সপ্তাহের পরে গর্ভপাত হলে তাকে বলা হয় স্টিলবার্থ। গর্ভের সমস্যা, ভ্রূণ ঠিকমতো না বাড়লে, গর্ভস্থ ভ্রূণ সংক্রমণের শিকার হলে বা মায়ের কোনো অসুখের কারণে মিসক্য়ারেজ বা স্টিলবার্থ হতে পারে। এটি এড়ানো হবু মায়ের হাতে থাকে না। তবে এরকমটা ঘটলে তার মানসিক অবস্থা উন্নত করতে নিয়মিত কাউন্সেলিং প্রয়োজন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন