স্তন ক্যানসারের বিষয়ে মাসজুড়ে সচেতনতা তৈরির কাজ চলছে চলতি অক্টোবরে। যেকোনো বয়সেই এই ক্যানসার হতে পারে। এমনকি গর্ভকালেও স্তন ক্যানসার হওয়া অস্বাভাবিক নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত প্রতি এক হাজার নারীর মধ্যে একজনের গর্ভাবস্থায় রোগটি ধরা পড়ে। তবে এ অবস্থায় এ রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসাপদ্ধতি কিছুটা জটিল।
প্রথমে আসা যাক রোগ নির্ণয়ের ব্যাপারে। গর্ভাবস্থায় স্তনে যে স্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে, তা অনেক সময় স্তন ক্যানসারের প্রাথমিক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে। চামড়া পুরু হয়ে যাওয়ায় বোঝা যায় না, কোনো ছোট চাকা বা দলা রয়েছে কি না। গর্ভাবস্থায় ম্যামোগ্রাফিও করা যায় না। কারণ এক্স-রে বা তেজস্ক্রিয় রশ্মি মায়ের পেটে থাকা ভ্রূণের ক্ষতি করতে পারে। কাজেই আলট্রাসনোগ্রাফিই ভরসা। এরপর বায়োপসি করে নিশ্চিত হতে হয়। এরপর আসে ক্যানসার কোন পর্যায়ে আছে, তা নির্ণয়ের পালা। কিন্তু রোগের পর্যায় নির্ণয়ে গর্ভাবস্থায় সিটি স্ক্যান বা এক্স-রে করা যায় না ভ্রূণের কথা ভেবে। কাজেই এখানেও আলট্রাসনোগ্রাফিই ভরসা। খুব বেশি প্রয়োজন হলে বিশেষ ব্যবস্থায় এমআরআই করা যেতে পারে।
এবারে আসা যাক চিকিৎসার বিষয়ে। আমরা সবাই কমবেশি জানি যে স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো হলো: অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, হরমোন থেরাপি ইত্যাদি। গর্ভাবস্থাকে সাধারণত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়: প্রথম ৩ মাস, মাঝের ৩ মাস এবং শেষের ৩ মাস। এই তিন ভাগের যেকোনো ভাগেই অস্ত্রোপচার করা সম্ভব। তবে অস্ত্রোপচারের ধরন নিয়ে কথা আছে। বর্তমানে স্তন ক্যানসারে অস্ত্রোপচারের বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হলো ‘ব্রেস্ট কনজারভেটিভ সার্জারি’। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে পুরো স্তন কেটে না ফেলে শুধু টিউমার বা ক্যানসারের অংশটুকু কেটে ফেলা। সাধারণত টিউমারের আকার ছোট হলে এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করানো হয়। কিন্তু এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারের পর অবশ্যই রেডিওথেরাপি দিতে হবে। গর্ভাবস্থায় এটাও এক বড় সমস্যা। কারণ, এ সময় রেডিওথেরাপি বা তেজস্ক্রিয়তা গর্ভের ভ্রূণের জন্য ভয়ংকর ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় স্তন ক্যানসার হলে ম্যাসটেকটমি, অর্থাৎ পুরো স্তন কেটে ফেলার অস্ত্রোপচারই সবচেয়ে নিরাপদ।
গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসে কেমোথেরাপি দেওয়া যাবে না। কারণ, এতে গর্ভের ভ্রূণের ক্ষতি হতে পারে। তবে মাঝের ৩ মাস ও শেষের ৩ মাসে কেমোথেরাপি দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঠিক করবেন, কোন কোন ওষুধ দিয়ে কেমোথেরাপি দেওয়া যাবে। গর্ভাবস্থায় কোনো ধরনের হরমোন থেরাপিই নিরাপদ নয়।
সবচেয়ে বেশি মনে রাখা জরুরি, গর্ভাবস্থায়ও স্তনে কোনো চাকা বা গোটা দেখা দিলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কিছুতেই অবহেলা করা চলবে না। এ সময় স্তনে স্বাভাবিক কিছু পরিবর্তন হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেকোনো অবস্থায়ই শরীরে ক্যানসার দানা বাঁধলে, তা যত দ্রুত নির্ণয় হয়, ততই ভালো।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন