আমাদের দেশে পরিচিত ফলের তালিকায় অন্যতম হচ্ছে ডালিম। আর এ ফলটি হচ্ছে অন্যতম একটি স্বাস্থ্যকর ফল। এটির সুমিষ্ট স্বাদের পাশাপাশি এতে থাকে অনেক উপকারী যৌগ। আর এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এ ফলটি ভিটামিন এ, সি ও ই সমৃদ্ধ। আর এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিটিউমার এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য আছে। এ ছাড়া ডালিমে ১০০টিরও বেশি ফাইটোকেমিক্যাল থাকায় এটি হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এগুলো ছাড়াও ডালিমে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। জানুন যেসব রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে ডালিম—
১. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে পুরুষদের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে। আর নিয়মিত ডালিম খেলে এই ক্যান্সার প্রতিরোধে এটি সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি নারীদের স্তন ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে।
২. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতেও অনেক কার্যকরী হচ্ছে ডালিম। গবেষণায় দেখা গেছে, ২৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দৈনিক ডালিমের রস খাওয়ানোর ফলে তাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩. উচ্চরক্তচাপ কমায় হার্টঅ্যাটাক এবং স্ট্রোক হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে উচ্চরক্তচাপ। আর ডালিম উচ্চরক্তচাপকে কমাতে সহায়তা করে। সমীক্ষায়দেখা গেছে, হাইপারটেনশনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দুই সপ্তাহ ধরে ডালিমের রস খাওয়ানো হলে তাদের উচ্চরক্তচাপ কমতে দেখা যায়।
৪. জয়েন্টের ব্যথা কমায় অনেকেরই জয়েন্টের ব্যথা হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। আর এ সমস্যার সমাধান মিলতে পারে ডালিমের রসে। এটিতে প্রদাহবিরোধী প্রভাব থাকার কারণে এটি বাতের চিকিৎসা করতে ও জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
৫. হার্ট ভালো রাখতে সহায়তা করে শরীরের মাংস পেশিতে দ্রুত অক্সিজেন পৌঁছে দিয়ে ধমনীকে পুরু ও শক্ত হতে বাধা প্রদান করে ডালিমের রস। আর এ কারণে এটি হার্ট ভালো রাখতে সহায়তা করে। এ ছাড়া উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি শরীরের কলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে ডালিম। এ ছাড়া এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও অনেক কার্যকরী।
৭. ত্বক উজ্জ্বল করে ও সুস্থ রাখে অনেক ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসাবে কাজ করে ডালিমের তেল। আর ডালিমে ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক অ্যাসিড থাকায় এটি ত্বক উজ্জ্বল করে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সহায়তা করে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন