আধুনিক জীবন-যাপনে চেয়ারে বসেই যখন দিনের মোটা একটি অংশ পার হচ্ছে, যখন কাজের ধরনই এমন যে জীবন ধারণের জন্য বসে কাজ করতে হচ্ছে তখন স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক দিক বিবেচনায় এ ভাবনাই প্রতিষ্ঠিত হয় যে শরীর প্রয়োজনীয় ক্যালোরি খরচ করতে পারছে না। আর যেহেতু শরীর প্রয়োজনীয় ক্যালোরি খরচ করতে পারছে না, তাই অনবরত অস্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে।
দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত ধারণা হোক কিংবা বিশ্বাস, কম-বেশি সবারই ভাবনায় এ বিষয়টি জায়গা করে নিয়েছে।
কিন্তু একদিন হঠাৎ যদি শোনা যায় প্রতিদিনের কাজের বাইরে অতিরিক্ত কিছুই আমাদের শরীরের প্রয়োজন নেই, বরং প্রয়োজনের বেশি কাজ করে অতিরিক্ত ক্যালোরিও খরচ হয় না, কেমন লাগবে তখন?
এমনই এক তথ্য বেরিয়ে এসেছে গবেষণায়।
বিবর্তনের ধারায় সভ্যতার বর্তমান পর্যায়ে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে প্রযুক্তির উৎকর্ষ জীবনকে করেছে সহজ। প্রাচীনকালে শুধু নিজেদের টিকে থাকার জন্যই মানুষকে খাবারের খোঁজে কিংবা অন্যের খাবার হয়ে যাবার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে যে পরিশ্রম করতে হতো তা থেকে বর্তমান মানুষের অবস্থান ঢের দূরে। কমেছে প্রতিদিনের পরিশ্রম। সাধারণ ধারণায় তাহলে কি কমছে ক্যালোরি খরচের পরিমাণ?
এ প্রশ্নের উত্তর বের করতে উত্তর তানজানিয়ায় এখনো টিকে থাকা কিছু শিকারী সম্প্রদায়ের একটি হাজদার ওপর গবেষণা কাজ পরিচালিত হয়। আধুনিক জীবনব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন এই সম্প্রদায় শিকারের ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল। তীর-ধনুক দিয়ে শিকার করা প্রাণী ও মাটির নিচে জন্মানো শষ্য খেয়েই জীবনধারণ করে তারা।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় হাজদা সম্প্রদায়ের সাথে সাধারণ অ্যামেরিকানদের তুলনায় একদিনে উভয়েরই একই পরিমাণ ক্যালোরি খরচ হয়েছে।
ফলাফল সন্দেহ তৈরি করায় অন্যান্য শিকারী সম্প্রদায়ের সাথে একই গবেষণা পুনরায় করা হলে, অভিন্ন ফলাফল আসে।
এর মূল কারণ হিসেবে গবেষকরা জানান, মানুষের শরীর প্রয়োজন কিংবা পুরষ্কার না পেলে অযথা কাজের জন্য বিবর্তিত হয়নি। টিকে থাকার জন্য তার প্রয়োজনীয় কাজটুকুকেই শরীর গ্রহণ করে এবং সে অনুযায়ী ক্যালোরি ক্ষয় করে।
গবেষণাগারের ইঁদুর ও চিড়িয়াখানার বানরের ওপরও গবেষণা চালিয়ে একই ফলাফল পাওয়া যায়।
‘এক্সারসাইজড’ গ্রন্থের লেখক ড. লিবারম্যানের মতে, এটি জেনে কোনোভাবেই শারীরিক চর্চায় অনুৎসাহিত হওয়া উচিৎ না। ব্যায়াম কিংবা শারীরিক চর্চা পড়াশোনার মতোই একটি আধুনিক কাজ। কয়েকশ বছর আগে পড়াশোনা মানুষের জীবনে অনুপস্থিত থাকলেও বর্তমানে তা যেমন বিশ্বজনীন, শারীরিক চর্চাকেও সেভাবে দেখা যেতে পারে।
এছাড়াও তিনি জানান, মধ্য বয়সের পর মানুষের কর্মক্ষমতা ও জীবনীশক্তি কমে যায় এমন ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে গবেষণায় দেখা যায়, ২০-৬০ বছর পর্যন্ত মানুষের মেটাবোলিজম সমানভাবে কাজ করে। নিয়মিত শারীরিক চর্চা দীর্ঘ সময় জীবনীশক্তি নিয়ে সুস্থ জীবন-যাপনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন