করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে বারবার। তারপরও খাবার কিনতে অনেককেই নিয়মিত দোকান-বাজারে যেতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা এক সঙ্গে অনেক খাবার না কিনে তিন-চারদিনের জন্য কিছু খাবার সংরক্ষিত রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। ।
তবে কিছু কিছু সবজি আছে যা কয়েকদিন টাটকা রাখা মুশকিল। এমন অনেক খাবারও আছে যেগুলো দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় না। সেক্ষেত্রে খাবার সংরক্ষণের জন্য কিছু বিষয় অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-
দুধ: ডিপ ফ্রিজের নিচে যে ট্রে থাকে, সেখানে দুধের প্যাকেট রাখতে পারেন। এখানে দুধ রাখলে পাঁচ দিন দুধ টাটকা থাকবে। চাইলে সরাসরি ডিপ ফ্রিজেও ভরে রাখতে পারেন দুধের প্যাকেট। তবে দুধ কেনার আগে অবশ্যই মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেখে কেনা উচিত।
পাঁউরুটি: ঘরে থাকার এই সময়ে অনেকেই সকালের নাস্তায় পাউরুটি বেছে নিচ্ছেন। দু’-এক দিনের জন্য পাউরুটি টাটকা রাখতে চাইলে বাইরের তাপমাত্রায় রাখুন। তবে বেশি দিনের জন্য ভালো রাখতে চাইলে ফ্রিজে রাখতে পারেন। তবে খুব বেশি পুরনো হয়ে গেলে খাওয়া ঠিক হবে না।
ক্যাপসিকাম, টমেটো ও ব্রকলি: কেনার পর দুই-তিনদিন বাইরে থাকলেও তাজা থাকবে এসব সবজি। তবে সাতদিন বা একটু বেশি সময় রাখতে চাইলে ক্যাপসিকাম ও ব্রকলি মাঝারি টুকরো করে কেটে নিন। টমেটো চার টুকরো করে কেটে নিন। এর পর একটা প্লেটে এই কাটা সব্জিগুলো এমন ভাবে রাখুন যেন একটার উপর একটা টুকরো না থাকে। প্লেটটি চাপা দিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। এতে সবজিগুলো ভালো থাকবে।
কাঁচা মরিচ: কাঁচা মরিচ ফ্রিজে রেখে অনেক দিন খাওয়া যায়। ফ্রিজে রাখার আগে বোঁটা ফেলে, ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এতে মরিচ ৯–১০ দিন টাটকা থাকবে।
গাজর: ছোট ছোট টুকরো করে কেটে, ফুটন্ত গরম পানিতে গাজর ২ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এ বার ঠান্ডা পানিতে ৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। এরপর একটা প্লেটে কাটা টুকরো পর পর সাজিয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রেও লক্ষ রাখতে হবে, যেন একটার উপর আর একটা টুকরো না থাকে।
পালং শাক: ফুটন্ত গরম পানিতে দু’মিনিট ফুটিয়ে পালং শাক ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। এর পর ভাল করে পানি নিংড়ে, শাক কেটে একটি এয়ারটাইট কৌটোয় ভরে ডিপ ফ্রিজে রাখুন। এতে শাক ভালো থাকবে কয়েকদিন। একইভাবে অন্য শাকও সিদ্ধ করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।
ধনে পাতা: ধনে পাতা ভালো করে ধুয়ে, পানিতে শুকিয়ে নিতে হবে প্রথমে। এর পর অল্প পরিমাণে পাতা ভাগ করে কয়েকটা পেপার টাওয়েল অথবা পেপার দিয়ে পেচিয়ে ভাগ ভাগ করে প্যাক করতে হবে। এরপর ফ্রিজে রেখে দিন। এতে অন্তত সাতদিন ধনে পাতা ভালো থাকবে।
আলু্: আলু ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়। ঝুড়িতে খোলা অবস্থাতেই রাখতে পারেন। তবে অন্যান্য সবজির সঙ্গে না রেখে আলুর জন্য আলাদা একটা ঝুড়ি বরাদ্দ করুন। তাতে আলু ভালো থাকবে বেশি দিন।
অন্যান্য সবজি : আরও কিছু সবজিও ভাপে সিদ্ধ করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। এর মধ্যে ফূলকপি, বাধাকপি অন্যতম। তবে বাজার থেকে সবজি আনার পর ভিনেগার বা পাতিলেবুর রস মেশানো পানিতে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে তবে শাকসবজি খাওয়া বা ফ্রিজে রাখা উচিত।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন