করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিদিন বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। এর সংক্রমণের লক্ষণগুলি পূর্বের থেকে আলাদা। হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণও। সরকার ও চিকিৎসক সকলকেই সাবধানতা অবলম্বন করতে বলছেন। এখনো অবধি এই মারণ রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র ওষুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই।
ডব্লিউএইচও’র মতে, সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে থাকে। ফলে, সংক্রামক রোগগুলির ঝুঁকি কম থাকে। তাই এই ভাইরাসকে পরাস্ত করতে হলে বাড়াতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাই সকলকে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার, প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কি খাবেন আর কি এড়িয়ে যাবেন-
এই সময় অতিরিক্ত লবণ খাবেন না
অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করলে মানুষ খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে। করোনাকালে ইমিউনিটি বাড়াতে প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবন না খাওয়াই ভালো। ডায়েটে অ্যাভোকাডো, মাছ, জলপাই তেল, ক্যানোলা, মাংস, নারকেল, পনির এবং ঘি রাখার চেষ্টা করুন।
পানির পরিমাণ বাড়িয়ে দিন, চিনি কম খান
ডাব্লিউ এইচ ও’র গাইডলাইন অনুসারে, প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে বলা হচ্ছে। এর ফলে দেহে জলের কোনও অভাব হবে না এবং দেহের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যতটা সম্ভব পানীয়তে চিনির ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। বিশেষভাবে প্যাকেটজাত ফল এবং শাকসবজি ব্যবহার করার সময়, লেবেলে পরিমাণ মতো চিনি এবং লবনের পরিমাণটি পড়তে ভুলবেন না।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন
কোভিড-১৯ এড়ানোর জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করা উচিত। অনুশীলন, ধ্যান এবং পর্যাপ্ত ঘুম প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করবে। লোকের সংস্পর্শ এড়াতে ঘরে বসে খাবেন এবং সংক্রমণ কমাতে চেষ্টা করুন।
আমিষ জাতীয় খাওয়া উচিত
আমিষ জাতীয় খাবারগুলো আপনাকে শক্তিশালী করে তুলবে। ডাব্লিউ এইচ ও’র প্রদত্ত গাইডলাইন অনুসারে, সপ্তাহে একবার বা দু’বার রেড মিট খাওয়া যায়। এছাড়া মাছ, ডিম এবং দুধের সঙ্গে ১৬০ গ্রাম মাংস, মটরশুটি খাবার খাওয়া উচিত।
শস্য এবং বাদাম খান
ডাব্লিউ এইচ ও’র মতে, শস্য এবং বাদাম ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। যে কেউ যদি ভুট্টা, ওট, গম, বাজারা, বাদামি চাল বা আলুর মতো ১৮০ গ্রাম শস্য খায় তবে সে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে। একই সঙ্গে, আপনার ডায়েটে ফল এবং শাকসবজি ছাড়াও বাদাম, নারকেল, পেস্তা জাতীয় বাদামও অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ফল এবং সবজি খাওয়া শুরু করুন
কোভিড ১৯’র দ্বিতীয় ঢেউ অত্যন্ত ভীতিজনক। এটি এড়াতে যতটা সম্ভব পুষ্টিকর খাবার খান। ডাব্লিউ এইচ ও নির্দেশ দিয়েছে, সংক্রমণ এড়ানোর জন্য পেয়ারা, আপেল, কলা, রুটবেরি, আঙুর, আনারস, পেঁপে, কমলা জাতীয় খাবার রোজ দু’কাপ খাবেন। সবজির মধ্যে সবুজ ক্যাপসিকাম, মরিচ, রসুন, আদা, কলা, কাঁচা মরিচ, ব্রোকলি খেতে হবে। চিনি, নুন এবং ফ্যাটযুক্ত খাবারের চেয়ে বেশি তাজা ফল এবং কাঁচা শাকসবজি খাওয়া উচিত। এগুলি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খুব উপকারী।
সংক্রমণ এড়াতে রান্নাঘরের এই টিপসগুলি অনুসরণ করুন
১. খাওয়ার আগে পানি দিয়ে ফল ও সবজি ধুয়ে নিন।
২. ব্যবহারের আগে এবং পরে প্লেট ধোয়ার অভ্যাস করুন।
৩. সবসময় রান্না করা এবং কাঁচা খাবার আলাদা রাখুন।
৪. খুব গরম খাবার পরিবেশন করবেন না।
৫. শাকসবজি বেশি রান্না করবেন না। এগুলি অতিরিক্ত রান্না করে ভিটামিন এবং খনিজ জাতীয় পুষ্টিগুলি নষ্ট হয়ে যায়।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন