পৃথিবীব্যাপী অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর একক কারণ হিসেবে শীর্ষে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বা হৃদরোগ। করোনা মহামারির এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে হৃদরোগীরা। করোনাকালে হৃদরোগ প্রতিরোধের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর পালিত হলো বিশ্ব হার্ট দিবস। এ উপলক্ষে আয়োজিত হলো বিশেষ অনুষ্ঠান ফরচুন নিবেদিত ‘হৃদয় দিয়ে জয় করি’র দ্বিতীয় পর্ব। এবারের বিষয় ছিল ‘করোনাকালে হৃদরোগ প্রতিরোধ’।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান এবং ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালের কার্ডিওলজি কনসালট্যান্ট ডা. এম এ হাসনাত। সঞ্চালনায় ছিলেন ডা. ফাইজা রাহলা। অনুষ্ঠানটি প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
শুরুতেই ডা. এস এম মোস্তফা জামানের কাছ থেকে জানা গেল করোনায় আক্রান্ত হৃদরোগীরা কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, সে সম্পর্কে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর হৃদরোগীরা বেশ কিছু জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ সময়ে দেখা গিয়েছে, বুকে ব্যথা, হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে মায়োকার্ডাইটিস, হার্ট ফেইলিউর, হৃৎপিণ্ডের ছন্দপতনের মতো সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আবার করোনামুক্ত হৃদরোগীদের পোস্ট কোভিড কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যেমন বুকব্যথা যদি আগে না হয় পরে নতুন করে ব্যথার সমস্যা বেড়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়া, পেটের পীড়া প্রভৃতি। এ ধরনের রোগীদের বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
এ সময়ে দেখা গিয়েছে, অনেক মানুষ বেশ সচেতন এবং সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে। হৃদরোগী ও তাদের পরিবারের মধ্যে এ ধরনের সচেতনতা ও সাবধানতা বেশি দেখা গিয়েছে। খুব বেশি সমস্যা না হলে কেউ সহজে বাসা থেকে বের হচ্ছে না বা চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছে না। চিকিৎসকের কাছে গেলে কীভাবে তাদের চিকিৎসা করা হচ্ছে, সে সম্পর্কে জানান ডা. এম এ হাসনাত। এখন সব রোগীই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরেই হাসপাতালে আসছেন। চেক আপ করার আগে–পরে রোগী ও চিকিৎসক—দুজনই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন। আর ছোটখাটো সমস্যার জন্য হৃদরোগীরা টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
হৃদযন্ত্রের সুস্থতা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। মহামারির জন্য দীর্ঘদিন গৃহবন্দী অবস্থায় থেকে অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। সেই সঙ্গে হাঁটাচলা, অন্যান্য ব্যায়াম করা থেকে সবাই দূরে চলে এসেছে। এতে মানুষের ভেতর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। এ জন্য সুস্থ থাকতে আর শরীরের ফিটনেস ধরে রাখতে ঘরের ভেতর থেকেই ব্যায়াম করতে হবে এবং মানসিকভাবে প্রফুল্ল থাকতে হবে।
হার্ট বা হৃৎপিণ্ড সুস্থ–সবল রাখতে খাদ্যাভ্যাস বেশ বড় ভূমিকা পালন করে। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা করোনাকালে খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। আঁশযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজিতে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল আছে। এটি হার্টের জন্য ভালো। আর চর্বিযুক্ত খাবার, গরু বা খাসির মাংস কম করে খেতে হবে। রান্নার সময় উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবহার করতে হবে। তবে একবার তেল দিয়ে রান্না করার পর দ্বিতীয়বার সেই একই তেল ব্যবহার করা যাবে না। অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, ফাস্টফুড পরিহার করতে হবে। বিশেষজ্ঞের আলোচনা থেকে জানা গেল যে ভাত, চিনি, লবণ—এই তিন ধরনের খাবার হার্টের জন্য খারাপ। এ জন্য পুষ্টিবিদেরা এই খাবারগুলোকে সাদা বিষ বলে থাকেন। এ খাবারগুলো একেবারে কম পরিমাণে খেতে পারলেই ভালো।
এ ছাড়া হার্টের সুস্থতার জন্য অবশ্যই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধূমপান, গুল, জর্দা থেকে দূরে থাকতে হবে। নিয়মমাফিক হাঁটাচলা ও ব্যায়াম করতেই হবে। এভাবেই এ সময়ে একজন মানুষ হৃদরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। অনুষ্ঠানে ডা. এস এম মোস্তফা জামান ও ডা. এম এ হাসনাত দর্শকদের হার্টের সমস্যাসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেন।
করোনাকালে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে হৃদরোগীরা করোনাকালে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে হৃদরোগীরা
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন