করোনাভাইরাসের তীব্রতা থেকে বাঁচতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি তাদের কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর আশঙ্কাও তত কম। তবে রাতারাতি এই ইমিউনিটি গড়ে ওঠে না। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীর চর্চা আপনাকে করোনা প্রতিরোধে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখবে।
এই মুহূর্তে ঘরে থেকে কীভাবে আপনার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবেন, সে বিষয়ে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ উম্মে সালমা তামান্না।
১. সুষম খাদ্য: মোট খাবারের ৫০-৬০ ভাগ কার্বোহাইড্রেট (ভাত, আলু, রুটি ইত্যাদি), ২০-২৫ ভাগ আমিষ (প্রধানত মাছ, মাংস, ডাল, দুধ, ডিম ইত্যাদি, সঙ্গে পর্যাপ্ত শাকসবজি) ও ১৫-২০ ভাগ চর্বিজাতীয় খাদ্য, ডিমের কুসুম, মাছের তেল, পনির, মাখন ইত্যাদি নিয়মিত খান।
২. আমিষ: দেহের বৃদ্ধিসাধনে আমিষের বিকল্প নেই। তাই মাছ, মাংস, কলিজা, ডিম, ডাল, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবার পরিমাণমতো খেতে হবে। এর মধ্যে মাছ, মাংস, ডিম এগুলো হলো প্রথম শ্রেণির আমিষ আর উদ্ভিজ্জ আমিষের উৎস যেমন- ডাল, বীজ; এগুলো হলো দ্বিতীয় শ্রেণির আমিষ।
৩. দুধ ও দুধজাতীয় খাবার: দুধ, দই, ছানা, পনির দেহের ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও আমিষের চাহিদা পূরণ করে। দৈনিক নির্দিষ্ট পরিমাণ দুধ বা দুধজাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত।
৪. স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাবার: তেল, ঘি, মাখন, মিষ্টি এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। দৈনিক সামান্য পরিমাণে স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণ করা দরকার। এর মধ্যে হেলদি ফ্যাট, যেমন: অলিভ, ক্যানোলা, সানফ্লাওয়ার বা বাদামের তেলকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৫. ভিটামিন ডি-যুক্ত খাবার: সামুদ্রিক মাছ বা মাছের তেল, ডিমের কুসুম, কলিজা, দই ইত্যাদি খেতে হবে। পাশাপাশি চেষ্টা করুন বাসার ছাদে বা বাড়ির উঠানে গিয়ে শরীরে ২০-৩০ মিনিট রোদ লাগাতে। এছাড়া খাদ্যতালিকায় ভিটামিন বি-৩, জিংক, আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস-সমৃদ্ধ খাবার রাখার চেষ্টা করুন।
৬. ফলমূল: দেশীয় ফল যেমন- আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, পেয়ারা, জাম্বুরা, আমড়া, আমলকি, জলপাই ইত্যাদি খুব বেশি বেশি খাওয়া যেতে পারে। লেবুর ওপর চাপ কমিয়ে অন্যান্য টকজাতীয় ফল খান।
৭. ভিটামিন বি-৩: যা মাছ, মাংস, বাদামি চাল, মাশরুম ও শাকসবজিসহ বিভিন্ন বীজ-জাতীয় খাবার, যেমন- শিমের বীজ, মটরশুটি, বাদাম, অ্যাভোকেডো ইত্যাদিতে থাকে।
৮. জিংক: এ মুহূর্তে এটা অত্যন্ত কার্যকরী একটি খনিজ, যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় সামুদ্রিক প্রাণী, বিশেষ করে শামুকে। এছাড়া মাংস, সয়াফুড, কালো তিসি, শিমের বীজ, মিষ্টিকুমড়ার বীজ, আলমন্ড, মসুর ডাল ইত্যাদিতেও পাওয়া যায়।
৯. অন্যান্য খাবার: মধু, আদা, রসুন, কাঁচাহলুদ, কালোজিরা, তিসি, আদা চা, লেবু চা ইত্যাদি বেশি বেশি খান।
১০. সঠিক সময়ে খাদ্যগ্রহণ: সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে রাতের খাবার শেষ করুন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন