করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময়ও জীবন থেমে নেই। প্রয়োজনের তাগিদেই কাজে বের হতে হচ্ছে। কর্মজীবীদের অনেককেই দুপুরের খাবারটা অফিসে সারতে হয়। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে সুশৃঙ্খল জীবনযাপন মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের এই সময় মুখে মাস্ক পরা এবং বারবার হাত ধোয়া যেমন জরুরি, তেমনই সঠিক পুষ্টিকর খাবারও জরুরি। এ ছাড়া হাত না লাগিয়ে, সামাজিক দূরত্ব মেনে খাওয়াটাও জরুরি।
এই অতিমারির সময় অফিসের ক্যানটিনে বা বাইরে রেস্তোরাঁয় গিয়ে না খাওয়াই ভালো। বাড়িতে তৈরি খাবার অফিসে নিয়ে যাওয়া উচিত। এতে বাইরের মানুষের সংস্পর্শ এড়ানো সম্ভব। আগে অফিসে সবাই মিলে একসঙ্গে বসে খেতেন অনেকেই। সংগত কারণেই এখন একসঙ্গে বসে খাওয়া কিংবা খাবার ভাগাভাগি করা উচিত নয়। এতে সবারই মঙ্গল।
খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন। জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে খাবার টেবিল বা নিজের ডেস্ক পরিষ্কার করে নিন। এবার বাড়ি থেকে আনা লাঞ্চ বক্স খুলে এমনভাবে খেতে হবে, যেন তাতে হাতের স্পর্শ খুব বেশি না লাগে। চামচ দিয়ে খেতে পারলে ভালো। প্লাস্টিকের ডিসপোজেবল চামচ কাঁটা হলে ভালো, নয়তো নিজের জন্য আলাদা প্লেট, চামচ রাখুন। প্লেট, চামচ ডিসপোজেবল হলে খাওয়া শেষে বদ্ধ বিনে তা ফেলে দিন। বাড়ি থেকে আনা প্লেট, চামচ, লাঞ্চ বক্স নিজেই ধুয়ে প্লাস্টিকের বা কাপড়ের ব্যাগে নিন। বাড়ি ফিরে আবার ভালো করে ধুয়ে নিন।
অফিসে খাওয়ার জন্য কয়েকটি পুষ্টিকর ও সহজে বহনযোগ্য খাবারের নমুনা:
চাল-ডাল, শাকসবজি দিয়ে খিচুড়ি। এর সঙ্গে ডিম থাকতে পারে।
ডিম এবং মৌসুমি সবজি দিয়ে তৈরি নুডলস বা পাস্তা।
পাঁচমিশালি সালাদ, যাতে থাকতে পারে মুরগির মাংসের সেদ্ধ করা ছোট টুকরো, গাজর, বরবটি, লেটুস, শসা, টমেটো ইত্যাদি। এর সঙ্গে অল্প পরিমাণ সেদ্ধ পাস্তা এবং টক দই থাকতে পারে। সঙ্গে স্যান্ডউইচও যোগ করতে পারেন।
টুকরো করা ফল যেমন আপেল, নাশপাতি, আঙুর, পাকা পেঁপে ইত্যাদি।
পায়েস, পুডিং, কাস্টার্ড, সেদ্ধ ডিম, সবজি কাটলেট, মাছ, মুরগি বা ডিম চপও থাকতে পারে খাবারের তালিকায়।
খাবার যেমনই হোক তা পুষ্টিকর হওয়া এবং খাবার তৈরিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত জরুরি। পরিষ্কার লাঞ্চ বক্সে খাবার নিয়ে চামচ টিস্যু পেপারে মুড়িয়ে নিতে হবে। নিজের খাবার নিজেই বহন করুন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন