এডিস নিধনে সাত দিন ধরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) পরিচালনা করছে চিরুনি অভিযান। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) মশার লার্ভা নিধনে চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রতিদিন এসব অভিযানে বাসাবাড়ি এবং নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ার কারণে লাখ টাকা জরিমানাও করছে দুই সিটিই। তার পরও মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গুতে। ঢাকার দুই সিটিই বলছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এডিসের লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে বাসাবাড়ির ভেতরে। ফলে নাগরিকরা সচেতন না হলে কোনোভাবেই সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে মশক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল হাদী লেনের এক ভবনে বাস করেন রিফাত সুলতানা। সম্প্রতি তিনি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে দক্ষিণ সিটি তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানে মেলে এডিসের লার্ভা। ফলে ওই ভবনের মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মশার লার্ভা পাওয়ার অভিযোগে ভবন মালিকদের জরিমানা করার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে প্রতিদিনই দুই সিটির অভিযানে। গতকাল দক্ষিণ সিটির ১৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত রেলওয়ে অফিসার্স কোয়ার্টার্স, জিগাতলা স্টাফ কোয়ার্টার্সসহ ৩৬টি নির্মাণাধীন ভবন এবং বাসাবাড়িকে পাঁচ লাখ ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। অন্যদিকে উত্তরের গতকালের অভিযানে মশার লার্ভা পাওয়ার কারণে জরিমানা আদায় হয়েছে দুই লাখ ৮২ হাজার টাকা।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। আমরা এখন আমাদের কন্ট্রোল রুম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক থেকে মশার লার্ভার বিষয়ে তথ্য পাচ্ছি। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা যদি কারো বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে মশার লার্ভা পাই তাহলে তাদেরকে জরিমানা করছি।’
অন্যদিকে রাজধানীর গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোড এলাকায় উত্তর সিটি মশার ওষুধ ছিটিয়েছে সোমবার। এরপর ওই এলাকায় মশা কমেছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। বলাকার মোড়ের বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঔষাদ ছিটাইলে মশা কম থাহে। কাইল (সোমবার) ছিটানোর পর থেইক্যা মশা কমছে।’ বলাকার মোড় থেকে একটু সামনে এগিয়ে হাতের বামে বাবলীর মোড়। সেখানে ভ্যানের ওপর বসে গল্প করছিলেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সপ্তাহে এক-দুই দিন এখানে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা মশার ওষুধ ছিটিয়ে যান। তখন মশা কমে। ওষুধ ছিটানোতে গ্যাপ পড়লে মশা বেড়ে যায়। যদিও সেই মশা বৃদ্ধির দায় এককভাবে করপোরেশনের ওপর চাপাতে নারাজ
বশির আহমেদ নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের কাজ মশার ওষুধ ছিটানো। সেটা সঠিকভাবে পালন না করলে সেই দায় অবশ্যই করপোরেশনের ওপর বর্তায়। তবে মানুষের বাসার মধ্যে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে সেই দায় নাগরিকের। ফলে করপোরেশন এবং নাগরিক দুই পক্ষই যদি তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।’
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের নগরবাসী বোতলে গাছ লাগায়, ফুলের টব কেনে। কিন্তু তার পানিটা নিয়মিত পরিষ্কার করে না। ঈদের ছুটিতে তারা সাত দিনের জন্য ঘর বন্ধ করে গ্রামে চলে যায়, তখন যে এসব টবে এডিস মশা জন্মায় তার দায় কার? তবে আমি এতটুকু বলব সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের দায় আছে। সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা মশক নিধনে কাজও করে যাচ্ছি। কিন্তু নাগরিক সচেতনতা ছাড়া এটা একার পক্ষে করা অসম্ভব।’
এদিকে গতকাল সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৬৪ জন। যার মধ্যে ঢাকার ২৪৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ১৬ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে এক হাজার ২৫ জন। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৪৭ জন। এই নিয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৭২। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে তিন হাজার ৪৪৬ জন এবং সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছে দুই হাজার ৩৭০ জন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন