পিৎজা, পাস্তাতেই কি শেষ ইতালীয় খাবার? মোটেই না। ইতালীয় খাবারের বৈচিত্র্যময় সম্ভার রয়েছে। সেখান থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে ৮টি খাবার, যেগুলো চাইলে আপনি বাড়িতে বানাতে পারেন।
তিরামিসু
উপকরণ: ক্রিম চিজ ৫০০ গ্রাম, ডিম ৫টি, চিনি ২০০ গ্রাম, ফ্রেশ ডাবল ক্রিম ৩০০ গ্রাম, খাওয়ার জেলাটিন ২৪ গ্রাম, কফি ১০ গ্রাম, চকলেট ২৫ গ্রাম, স্পঞ্জ ফিংগার বা লেডি ফিংগার বিস্কুট (না পেলে স্পঞ্জ কেক ব্যবহার করতে পারেন) প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: বড় পাত্রে ক্রিম চিজ ও চিনি দিয়ে ভালোমতো ফেটান, যাতে মিশে গিয়ে গাঢ় হুইপড ক্রিমের মতো হয়। এবার পরিবেশন পাত্রে সাজান। আগেই কালো কফি বানিয়ে রাখুন। এ জন্য ছড়ানো পাত্রে সামান্য তরল কফি ছড়িয়ে দিন। এর ওপর বিস্কুট সাজান। কয়েক সেকেন্ড রাখলে বিস্কুট কফি শুষে নেবে। তবে একদম নরম যাতে না হয়। এভাবে আবার কফি ছড়িয়ে বিস্কুটের স্তর সাজান। অর্ধেক পরিমাণ বিস্কুট রেখে দিন। এবার এর ওপরে ক্রিম চিজ মিশ্রণ দিন। আবার কফি ও বিস্কুটের স্তর বানান। সবশেষে ক্রিমের আরেক স্তর দিন। এবার পাত্র ঢেকে কয়েক ঘণ্টা বা সারা রাত ফ্রিজে রাখুন। বের করে ওপরে সামান্য কোকো পাউডার ছিটিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
প্রণালি: ক্রিম হুইপ করে নিন। কিশমিশ ও ওয়ালনাট মিশিয়ে ফিলিং তৈরি করে নিন।
মাখন ও চিনি বিট করুন। তাতে একটা একটা করে ডিমের কুসুম মেশান। চকলেট গলিয়ে এতে দিয়ে বিট করুন। শেষে ময়দা দিয়ে মিশিয়ে ব্যাটার বানিয়ে নিন।
ডিমের সাদা অংশ বিট করে মেরাং বানিয়ে নিন। কেক ব্যাটারে মেরাং মেশান। বেকিং ট্রেতে বেকিং পেপার বিছিয়ে তাতে ব্যাটার ঢেলে ওভেনে ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে ১৫-২০ মিনিট বেক করুন। বের করে ওপরে ফিলিং বিছিয়ে শক্ত করে রোল করে নিন। ফ্রিজে ৩০ মিনিট রেখে বের করে গলানো চকলেট ছড়িয়ে দিন ওপরে। এবার ছোট গোল টুকরা করে কেটে পরিবেশন করুন।
টমেটো মোৎজারেল্লা
উপকরণ: চেরি টমেটো ৩০০ গ্রাম, মোৎজারেল্লা চিজ ১০০ গ্রাম, অলিভ অয়েল ২০ মিলিলিটার, বেজিল-পেসটো সস (কিনতে পাবেন সুপারশপে। না পাওয়া গেলে সামান্য তুলসী বাটা, রসুন, একটু অলিভ অয়েল মিশিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন) ২৫ গ্রাম, তুলসীপাতা (বেজিল) ১০ গ্রাম, লবণ ও শুকনা মরিচগুঁড়া এক চিমটি।
প্রণালি: টমেটো মাঝখানে কেটে বাটিতে রাখুন। তাতে অলিভ অয়েল ও বেজিল-পেসটো সস দিয়ে মাখান। লবণ-মরিচ ছিটিয়ে দিন। মোৎজারেল্লা হাত দিয়ে ভেঙে টমেটোর ওপর ছড়িয়ে দিন। ওপরে আরেকটু সস ছিটিয়ে, তাজা বেজিল দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
পিৎজা মারগারিটা
উপকরণ: পিৎজা ডো ১ কেজি, মোৎজারেল্লা চিজ ৫০০ গ্রাম, টমেটো সস কিংবা পিৎজা সস ২০০ গ্রাম, টমেটো টুকরা ২০০ গ্রাম, বেজিল পাতা ২০ গ্রাম, অরিগেনো ৫ গ্রাম।
ডোর জন্য: ময়দা ৬০০ গ্রাম, পানি ৩৫০ গ্রাম, অলিভ ওয়েল ৬০ গ্রাম, লবণ ১৫ গ্রাম, চিনি ১৫ গ্রাম, ইস্ট ৬ গ্রাম।
প্রণালি: ডোর সব উপকরণ মিশিয়ে ডো বানিয়ে পিৎজা ট্রেতে ছড়িয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। এর ওপর সস ঢেলে টমেটোর টুকরাগুলো দিয়ে দিন। সবার ওপরে মোৎজারেল্লা পনির এবং বেজিল ও অরিগেনো ছড়িয়ে দিন। ওভেনে ২৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে ৬ মিনিট বেক করুন। বের করে গরম গরম পরিবেশন করুন।
প্রণালি: প্যানে মাখন গলিয়ে তাতে ক্রিম দিন। একটু পর চিজগুলো দিয়ে দিন। তাতে সেদ্ধ স্প্যাগেটি দিয়ে ভালোমতো মিশিয়ে নিন। স্বাদমতো লবণ ও মরিচ গুঁড়া দিন। নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন। ওপরে একটু ভাঙা পনির ছড়িয়ে দিন।
তিলে টুনা
উপকরণ: তাজা টুনা মাছ ৩০০ গ্রাম, তিল ৪০ গ্রাম, কালো গোলমরিচ ১০ গ্রাম, অলিভ অয়েল ২০ মিলিলিটার, লেবুর রস ১০ মিলিলিটার, রসুন ৫ গ্রাম, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: টুনা মাছ কেটে পরিষ্কার করে নিন। লেবুর রস, অলিভ অয়েল, রসুন-গোলমরিচ থেঁতো করে এবং তিল দিয়ে মেখে দুই ঘণ্টা রাখুন। প্যানে তেল গরম করে মাছ দিন। ওপরটা বাদামি হয়ে এলে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। ভেতরটা নরম থাকবে। ঠান্ডা করে পাতলা করে কেটে পরিবেশন করুন।
বিফ কারপাচ্চো
উপকরণ: গরুর মাংসের ফিলে (টেন্ডারলয়েন ব্যবহার করতে হবে) ৩০০ গ্রাম, অলিভ অয়েল ২৫ মিলিলিটার, বেজিল পাতা ১৫ গ্রাম, রসুন কোয়া ১৫ গ্রাম, কালো গোলমরিচ গুঁড়া ৫ গ্রাম, বিট লবণ ৫ গ্রাম, পারমিজান পনির ৩০ গ্রাম, মাস্টার্ড ১০ গ্রাম।
প্রণালি: মাংস পরিষ্কার করে পনির ও বেজিল বাদে বাকি সব উপকরণ দিয়ে মেখে রাখুন। প্লাস্টিক শিট দিয়ে মুড়ে খুব শক্ত করে রোল করে নিন। ফ্রিজে রেখে জমিয়ে নিন। বের করে খুব সরু করে কেটে নিন। পছন্দমতো সবজি, বেজিল পাতা, পারমিজান ও অলিভ অয়েল দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
সিসিলির সূর্য
উপকরণ: সাদা চকলেট ৩০০ গ্রাম, ফ্রেশ ডাবল ক্রিম ৫০০ গ্রাম, ডিম ৩টি, জেলাটিন ১০ গ্রাম, সাজানোর জন্য জ্যাম ২০ গ্রাম।
প্রণালি: সাদা চকলেট গলিয়ে নিন। ক্রিম কিছুটা ফেটিয়ে নিন। ডিমের কুসুম, ফ্রেশ ক্রিম জেলাটিন ও চকলেট একটি পাত্রে মিশিয়ে ফ্রিজে দু-তিন ঘণ্টা রাখুন। পাত্র উল্টিয়ে বের করে ওপরে জ্যাম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন