আমকে ফলের রাজা বলা হয়। স্বাদ ও সুবাসে আম অন্যান্য ফলের চেয়ে সেরা। ছোট বড় সবাই আম পছন্দ করেন। আমার বেশি সুস্বাদু বলে বেশি পরিমাণে খায়া যাবে না। এবার জেনে নিন বেশি আম খেলে যেসব ভয়ঙ্কর বিপদ হবে।
যাদের ত্বকে অ্যালার্জির প্রবণতা আছে, তারাও আম খাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ আনুন। এদের আম খেলে চোখ জ্বালা, হাঁচি, পেটে ব্যথা, ঠান্ডা লেগে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই আম খাওয়ার আগে সচেতন থাকুন।
অনেকে আম চিবিয়ে না খেয়ে আমের জুস করে খান। কিন্তু এতে আমের মধ্যে অবস্থিত ফাইবারগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সেই ফাইবারের গুণাগুণ শরীরে কাজে লাগে না। উল্টে পেটের সমস্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আর্থারাইটিস বা বাতের ব্যথায় যারা ভোগেন তারা আম এড়িয়ে চলুন। আম খেলে এই ধরনের ব্যথা বাড়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। একান্তই আম খেতে চাইলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন।
আম খাওয়ার সময় কিছু সচেতনতাও অবলম্বন করতে হবে। খেয়াল রাখুন, আমে লেগে থাকা আঠা যেন কোনোভাবে মুখে লেগে না যায়। এ থেকে মুখে চুলকানি, জ্বালা হতে পারে। বেশ কয়েকদিন এর দাগও থেকে যায়। তাই আম খাওয়ার সময়ে এই আঠা যাতে না লাগে সেদিকে নজর দিতে হবে।
অতিরিক্ত আম খেলে আরও যে বড় সমস্যা হয় সেটি হল হজমের সমস্যা। রোজ বেশি পরিমাণে আম খেলে হজমশক্তির উপর তার প্রভাব পড়ে। শুধু তা-ই নয়, দিনের পর দিন অতিরিক্ত আম গ্যাসটাইট্রিসের সমস্যাকেও উস্কে দেয় অনেকটা। তাই হজম ক্ষমতাকে ঠিক রাখতে চাইলে ঘন ঘন আম খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
আজকাল বহু আমই কৃত্রিম ভাবে পাকানো হয়। ক্যালশিয়াম কার্বাইড ব্যবহার করা হয় আম পাকাতে। এই রাসায়নিকগুলো ব্যবহারের ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। এর থেকে শরীরে ক্লান্তি, অবশ বোধ করা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এই সব রাসায়নিক ব্যবহার করার ফলে ত্বকেরও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আম রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এটি ফ্রুকটোজে ভরপুর। তাই যারা ডায়াবেটিসের রোগী, তাদের পক্ষে আম বড় বিপদ হয়ে দেখা দিতে পারে। ব্লাড সুগার আয়ত্তে রাখতে তাই নিয়ম-নীতি ভেঙে ও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আম একেবারেই নয়। খেলেও নিয়ন্ত্রণ রেখে খান।
আমে ভিটামিন সি ও ক্যালোরি দুইয়ের পরিমাণই যথেষ্ট থাকে। মাঝারি সাইজের আমে থাকে ১৩৫ ক্যালোরি। কিন্তু যারা ওবেসিটির সমস্যায় ভুগছেন এবং ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের পক্ষে এই কারণেই আম ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে। তাই পরিমাণ বুঝে আম খান।
বেশি আম খাওয়া মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় হলেও অতিরিক্ত আম খেয়ে কিন্তু বিপদও ডাকছেন আপনি। ডাক্তারদের মতে শরীরের দিকে খেয়াল না রেখে আম খেলে কিন্তু আপনার জন্য অপেক্ষা করছে নানা ক্ষতি।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন