চার ফসলি শস্যাবর্তন অনুসরণ করায় উত্তরাঞ্চলের উঁচু এলাকাগুলোর কৃষিচিত্র পাল্টে গেছে। একটি স্বল্পমেয়াদী আউশ ধানের কল্যাণে বন্যা ও ফসলশূন্য সময়ে এসেছে নবান্নের আনন্দ। ওই চিত্র সারাদেশের কৃষির জন্যই জানান দিচ্ছে এক শুভবার্তা।
বন্যার পানি কেবল নামছে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে। নিচু এলাকার বহু কৃষক হারিয়েছেন ক্ষেতের ফসল, আমন বীজতালা। পানি নামা ক্ষেতে অনেকে রোপন শুরু করেছেন আমন চারা।
এই সময়ের উত্তরের কয়েক হাজার কৃষকের ঘরে এসেছে আউশের নবান্ন। কমপক্ষে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে দোল খাচ্ছে পাকা ধানের সোনালী শীষ। কৃষকদের চোখে-মুখে দিন পাল্টানোর তৃপ্তি।
কৃষকরা বলছে, এক বিঘায় চারটি ফসলের খরচ হয়েছ প্রায় ১৪ হাজার ৭০ টাকার মত। বিক্রি করতে গিয়ে পেয়েছি ২৯ হাজার ৩০ টাকা। প্রায় ১৫ হাজার ৭০ টাকা লাভ। বছর দুয়েক আগেও কৃষক এই দিনটির কথা ভাবতেও পারেনি। স্বল্পমেয়াদী আউশের জাত হাতে পাওয়ার পর দুই-তিন মৌসুমেই পাল্টে গেছে পুরো চিত্র।
২০০৮ সাল থেকে আউশের স্বল্পমেয়াদী স্থানীয় জাত পারিজা নিয়ে কাজ চলছে গবেষণা পর্যায়ে। তারপর বঙ্গবন্ধুু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে এটি পৌঁছে গেছে স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠনের হাতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চারফসলি ধারাটি জাতীয় কৃষি পরিকল্পনা যুক্ত করার কথা।
বাংলাদেশ বিশ্ব ব্যাংকের কৃষি বিশেষজ্ঞ ও কনসালট্যান্ট ড.এম জি নিয়োগী বলেন, জাতীয়ভাবে এ প্রকল্পকটি অন্তর্ভুক্ত করলে ১৮ লক্ষ টন অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মঈনুল হক বলেন, দেশের অনন্যা অঞ্চল বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চলেও চারফসলি উৎপাদন সম্ভব। উত্তরের একসময়ের মঙ্গাপীড়িত মানুষ আবারো স্বপ্ন দেখছে শস্যভান্ডার হিসেবে তাদের সুখ্যাতিকে ফিরিয়ে আনার।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন