বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ বুধবার রাতে অবৈধ ও চোরাই মোবাইল বিক্রির সাথে জড়িত একটি চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্যকে আটক করেছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা মোবাইল হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বাজারে বিক্রি করে আসছিলো।
আইএমইআই নম্বর প্রত্যেক ফোনের জন্য আলাদা এবং এই সুনির্দিষ্ট নম্বর দিয়ে মোবাইল নেটওয়ার্কে কোন একটি সুনির্দিষ্ট মোবাইলের অবস্থান চিহ্নিত করা সম্ভব।
পুলিশের ডিবি এবং সিআইডি বিভাগের সদস্যরা বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে ২০ জনকে আটক করে, যাদের কাছে বেশ কিছু চোরাই মোবাইল ফোন ছাড়াও হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার কয়েকটি ডিভাইস পাওয়া যায়।
এই অপরাধীরা চুরি করা বা ব্যবহৃত মোবাইল কিনে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বাজারে বিক্রি করতো বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ বলছে, অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত আইএমইআই নম্বরের ফোন সেট ব্যবহার করলে অপরাধীকে খুঁজে বের করার সুযোগ কমে যায়।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, “চুরি হওয়া ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করলে ঐ ফোন খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। আবার অপরাধীরা অপরাধ করার আগে এই ধরনের ফোন হাতে পেলে এর ফায়দা নিতে পারে, কারণ তখন ফোনের মাধ্যমে অপরাধীকে আর খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় না।”
রেজাউল হায়দার জানান আটক হওয়া ব্যক্তিরা অবৈধভাবে আমদানি করা কিছু ডিভাইস দিয়ে ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে আসছিল এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।
আইএমইআই নম্বর কী?
আইএমইআই বা ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি নম্বর একটি ১৫ ডিজিটের নম্বর, যেটি কোনো মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরি করার সময় এর মধ্যে প্রোগ্রাম করা থাকে।
এই নম্বরটি মূলত মোবাইল হ্যান্ডসেটটির পরিচয় বহন করে।
এই নম্বরের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয় যে ফোনটি কোন এলাকায় ব্যবহার করা যাবে এবং কোন ফ্যাক্টরিতে এটি তৈরি হয়েছে।
এছাড়া আইএমইআই নম্বরের মধ্যেই ফোনটির জন্য একটি স্বতন্ত্র সিরিয়াল নম্বর এবং পুরো নম্বরটি যাচাই করার জন্য একটি সংখ্যা দেয়া থাকে।
সাধারণত হ্যান্ডসেট হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে এই আইএমইআই নম্বরের মাধ্যমে হ্যান্ডসেটটির অবস্থান খুঁজে বের করা সম্ভব হয়।
এছাড়া নতুন ফোন কেনার সময় ঐ ফোনের আইএমইআই নম্বরের মাধ্যমে জানা যেতে পারে যে ঐ ফোনটি এর আগে কখনো ব্যবহার করা হয়েছে কি না।
নম্বর পরিবর্তনে নিরাপত্তার ঝুঁকি
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন একটি সেটের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করা সম্ভব হলে যে কারো ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
মি. সাবির বলেন, “সিম ক্লোন করার প্রযুক্তি অনেক আগেই আবিষ্কার হয়েছে। এখন যদি আইএমইআই নম্বরও ক্লোন করা সম্ভব হয়, তাহলে যে কারো পরিচয় নকল করে অপরাধ সংঘটন করা সম্ভব হবে এবং আইএমইআই পরিবর্তন করার কারণে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও ঐ ফোনের অবস্থান নির্ণয় করতে পারবে না।”
একই সাথে সিম এবং ফোনসেট এর পরিচয় ক্লোন করার ফলে এই ধরণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক লেনদেনের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এছাড়া কোনো ফোনসেট কেনার আগে সেটি চুরি করা কিনা বা নকল কিনা তা যাচাই করে দেখার জন্যও আইএমইআই নম্বর প্রয়োজন হয় বলে মন্তব্য করেন মি. সাবির।
“ফোনসেট চুরি করা হলে আইএমইআই নম্বরের এবং মোবাইল অপারেটরের সাহায্যে জানা সম্ভব যে সেটি এর আগে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা। কিন্তু আইএমইআই পরিবর্তন করা হলে বোঝা সম্ভব নয় যে এর আগে ফোনটি ব্যবহার করা হয়েছে কিনা। তখন কম দামে চোরাই ফোন বিক্রি করা সহজ হয়ে যায়।”
যেভাবে ফোনের আইএমইআই নম্বর যাচাই করবেন
আপনার ব্যবহারের হ্যান্ডসেটটি আসল কিনা এবং যেসব উপকরণ ফোনের সাথে সংযুক্ত রয়েছে বলা হয়েছে, আসলেই সেই একই উপকরণ ফোনের সাথে রয়েছে কিনা তা যাচাই করার একটি পদ্ধতি রয়েছে।
আপনার ফোনে *#06# ডায়াল করলে আইএমইআই নম্বর দেখাবে।
এবার আইএমইআই.ইনফো ওয়েবসাইটে গিয়ে ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বরটি বসান এবং ‘চেক’ বাটনে চাপুন।
পরের পেইজে আপনার ফোনের মডেল নম্বর, কোন সালে তৈরি করা হয়েছে, ফোনে কী কী উপকরণ রয়েছে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আসবে।
যদি সেসব তথ্য না আসে তাহলে আপনার ফোনটি নকল বা এর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে – এমন হতেও পারে।
আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনের ফলে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক লেনদেনের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে
আইএমইআই বা ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি নম্বর একটি ১৫ ডিজিটের নম্বর, যেটি কোনো মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরি করার সময় এর মধ্যে প্রোগ্রাম করা থাকে
চুরি যাওয়া হ্যান্ডসেটগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করলে সেগুলোর অবস্থান নির্ণয় কঠিন হয়ে পড়ে
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন