করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি। অনেক শিক্ষার্থী ঘরে বসে আছেন। অনেকে অলস সময় কাটাচ্ছেন। তবে মিহাদ সরকার ও সাদেকুল ইসলাম এই সময়ে অলস বসে না থেকে সবজি ও পেঁপের বাগান করেছেন। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে তাঁরা বাড়তি আয় করছেন। তাঁদের সাফল্য দেখে অন্য শিক্ষার্থীরাও সবজি চাষে উৎসাহী হচ্ছেন। মিহাদ সরকার ও সাদেকুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার জগদীশপুর সরকারপাড়া গ্রাম। উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে এ গ্রাম। গত শুক্রবার তাঁদের বাড়ি যাওয়ার পথে জগদীশপুর সরকারপাড়া গ্রামে ঢুকেই দেখা যায় মাঠজুড়ে সবজি ও পেঁপের বাগান। বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করতেই একজন জানান, মিহাদ ও সাদেকুল পেঁপেখেতে কাজ করছেন। এই প্রতিবেদককে দেখে জমি থেকে আলে উঠে আসেন তাঁরা। শোনান সবজি ও পেঁপে চাষের গল্প। মিহাদ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর অব অ্যাগ্রিকালচার এডুকেশনের শিক্ষার্থী। আর সাদেকুল ইসলাম পড়েন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়। তাঁরা দুই বন্ধু নিজ বাড়িতে চলে আসেন। ঘরে বসে না থেকে দুই বন্ধু মিলে কিছু একটা করার কথা ভাবেন। তাঁদের মাথায় আসে সবজি ও পেঁপে চাষের কথা। কাস্তে–কোদাল নিয়ে নেমে পড়েন। ৫ এপ্রিল দুই বন্ধু এক একর জমি বর্গা নিয়ে সবজি ও পেঁপের বাগান করেন। দেখতে দেখতে সবজি আর পেঁপের বাগান সবুজে ভরে উঠেছে। গত ছয় মাসে সবজি বিক্রি করে খরচ বাদে ৩৫ হাজার টাকা আয় হয়েছে। পেঁপেও বিক্রি করেছেন ৪০ হাজার টাকার।
মিহাদ বলেন, এক একর জমিতে সবজি ও পেঁপে চাষ করতে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত পেঁপে আর সবজি বিক্রি হয়েছে ৯০ হাজার টাকার। এখনো গাছে যে পরিমাণ পেঁপে আছে, তা বিক্রি হবে দেড় লাখ টাকার মতো। দুই বন্ধুকে অনুসরণ করে অনেক বেকার যুবক, গরিব ছাত্র, হতাশ কৃষকের চোখে ফুটেছে আশার আলো। গ্রামের ১৫-২০ শিক্ষার্থী সবজি চাষ করছেন। ওই গ্রামের আবু ছায়েম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। করোনার সময় তিনি ঘরে বসে না থেকে বাড়ির পাশে ২০ শতক জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করছেন। ঘাস বিক্রি করে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকা আয় করেছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেনানগর গ্রামের বাসিন্দা ছায়েমের বন্ধু নাজমুল ইসলাম। সবজির পাশাপাশি করছেন মাছের চাষ। এ পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকার মাছ ও ২০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। এতে খরচ বাদে লাভ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ওই লাভের টাকায় তিনটি ছাগল কিনে লালন–পালন করছেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘মিহাদ সরকার ও সাদেকুল ইসলামের সবজি ও পেঁপে চাষ আমি দেখেছি। ওই এলাকার অনেক শিক্ষার্থী সবজি চাষ করছেন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন