মানসিক অবসাদের পাশাপাশি শারীরিক প্রতিবন্ধকতার ভেতরেও এক স্বর্গীয়
সুখের সন্ধান দিতে পারে ছাদকৃষি। রাজধানীর লালমাটিয়ায় রাহেলা হালিমের
১৬ বছরের ছাদকৃষি জানান দিচ্ছে সেকথা।
তিনতলা ভবনের ২৫০০ বর্গফুটের ছাদে এ কৃষি আয়োজনের বয়স ১৬ বছর। সবজি আর
ফুলমুলের এই উৎপাদন ক্ষেত্রের পরিচ্ছনন্নতাই বলে দেয় এখানে উদ্যোক্তার
মনোযোগ কতো গভীর। ছাদের এই ফল ফুল আর সবুজ গাছপালা প্রতিনিয়তই দেয় নতুন
ধারণা।
এ প্রসঙ্গে ছাদ কৃষি উদ্যোক্তা রাহেলা হালিম বলেন: গাছগুলোকে আমার ছেলে-মেয়ের মতোই দেখতে হয়। এরা প্রতিদিনই আদর চায়। প্রতিদিন না থাকলে গাছ শুকিয়ে যায়, গাছ মরে যায়। আমার মন খারাপ হলে ছেলে-মেয়েদের বলি, আমাকে ছাদে নিয়ে যাও। আমাকে রেখে আসো। সব সময় ছোট গাছ এনে আমি বড় করি। একবারে বড় গাছ আনলে আমার মনে তৃপ্তি লাগে না।
রোগবালাইসহ কিছু সমস্যাও থাকে। সেগুলো মোকাবিলা করতে উদ্যোক্তা নিজস্ব পরীক্ষা নিরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
তিনি বলেন: আমার ছাদ বাগানে আম গাছ থেকে শুরু করে আছে জামরাল। এছাড়াও টমেটা-বেগুনের মতো কিছু মৌসুমী সবজিও হয় আমার বাগানে।
গাছের রোগ প্রতিরোধ নিম পাতার রস ব্যবহার করেন তিনি। এছাড়াও মাঝে-মাঝে রসুন-পেঁয়াজ রসও ছিটান।
রাজধানী ঢাকাকে বাসযোগ্য রাখতে যেসব মানুষ প্রতিনিয়ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে চলেছেন তাদেরই একজন রাহেলা হালিম।
আম, লিচু, নারকেলের ব্যবসায়িক ফলবাগানে সার তো নিয়মমতো পড়ে তবে বড় গাছে আর যাই হোক রোগপোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য ঠিকমতো স্প্রে চাষিরা করে উঠতে পারেন না। খোলা মাঠের সবজি, ধান বা ডালশস্যের সাধারণ স্প্রে যন্ত্র যেমন ন্যাপসাক স্প্রেয়ার বা হ্যান্ড কম্প্রেশন স্প্রেয়ারে কাজ হয়, যা আবার বড় ফল গাছে (আম, লিচু, নারকেল, কাঁঠাল) বা বড় বেড়ের (ডালপালা পরিধি যুক্ত) পেয়ারা, সবেদা, কুল, লেবু গাছে একেবারেই অনুপযুক্ত। চাষিরা কিন্তু একই স্প্রেয়ার ব্যবহার করেন। আর তার ফলে কীট বা রোগনাশক বা পরিচর্যার হর্মোন ইত্যাদি ব্যবহার হলেও তার কোন কাজও হয় না। রোগপোকা তো নিয়ন্ত্রণ হয়ই না, শুধু শুধুই চাষের খরচ বাড়ে।
ফলবাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্রের ব্যবহারের জন্য আমাদের চাষিভাইদের উপযোগি প্রযুক্তির আলোচনা করলাম। ফলবাগানে স্প্রে যন্ত্র ব্যবহারের আগে চাষিভাই বোনেদের বেশ কিছু বিষয় চিন্তাভাবনা করে স্প্রেয়ার কেনা দরকার। মনে রাখবেন, আপনার ফলবাগান হল দীর্ঘস্থায়ী লাভের বিনিয়োগ। অনেকটা ফিক্সড ডিপোজিট বা মান্থলি ইনকাম যোজনার মতো। আপনার কেনা মেশিনটিও কিন্তু সুষ্ঠুভাবে দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য।
ফলবাগানে রোগপোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্প্রেয়ার কিনতে যাওয়ার সময় দেখার বিষয় :
লম্বা ও বড় গাছে স্প্রে দেবার সুবিধা।
বাগানের আয়তন, গড় ফলন ও বছরে উৎপাদন। ভালোভাবে ওষুধ স্প্রে করার কার্যকারিতা।
সার্ভিসের সুবিধা ও আপনার নিকটবর্তী শহরে স্পেয়ার পার্টসের উপলব্ধতা।
ব্যবসায়িক ব্যবহারের পরিপ্রেক্ষিতে
এসব বিষয়গুলি চিন্তাভাবনা আগে থেকে করলে ফলচাষি বা ফলবাগান লিজ নেওয়া ব্যবসায়িদের পক্ষে বাগানের ফল ফসলের রোগপোকা নিয়ন্ত্রণের যথোপযুক্ত কৃষিযন্ত্র কেনা সম্ভব। মাঠের ফসলের ক্ষেত্রে হ্যান্ড ন্যাপসাক স্প্রে আর এরই উন্নত সংস্করণ হাইটেক স্প্রেয়ারই বেশি চলে। এগুলির কার্যপ্রণালী হাতের মাধ্যমে হওয়ায় চারা তৈরি করে স্প্রে নির্গমনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এধরণের স্প্রেয়ারগুলি ব্যটারি ইলেক্ট্রিক বা জ্বালানি দেওয়া মোটরের মাধ্যমে চালানোর মত যন্ত্র ব্যবস্থাও আছে যাতে অল্প সময়ে বেশি জায়গায় সূক্ষতার সঙ্গে দ্রবণ ছড়ানো সম্ভব। তবে যে সমস্ত চাষিভাই বোনেরা এধরণের স্প্রেয়ারগুলি দিয়ে ফলগাছ স্প্রে দেবেন, তারা আশানুরূপ ফল পাবেন না। ছোট ফলগাছ যেমন আনারস, কলা, পেঁপে গাছে একধরণের স্প্রেয়ারগুলি দিয়ে শস্যসুরক্ষা সম্ভব হলেও আম, লিচু, পেয়ারা, কাঁঠাল, নারকেল ইত্যাদি অধিকাংশ ফলগাছে বা বাগানে এগুলি অনুপযুক্ত। ফলে আমাদের উঁচু ফলগাছের চারিদিকে সমানভাবে শস্যসুরক্ষার স্প্রে দিতে হলে অন্য ধরণের স্প্রেয়ার বেছে নিতে হয়।
আপনার ছাদকে করে তুলুন রঙিন আর মনোমুগ্ধকর! চন্দ্রমল্লিকা, যা তার মিষ্টি গন্ধ ও উজ্জ্বল রঙের জন্য পরিচিত, আপনার ছাদকে সেজে তুলতে পারে এক নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর বাগানে। সঠিক যত্ন আর পরিকল্পনার মাধ্যমে চন্দ্রমল্লিকার গাছগুলো আপনার ছাদকে রূপ দেবে এক সবুজ-সুন্দর স্বর্গে। এখনই শুরু করুন চন্দ্রমল্লিকার যত্ন আর সাজানোর যাত্রা!
🌼 সময়মতো ছাঁটাই করুনঃ শুকিয়ে যাওয়া পাতা এবং ডাল ছেঁটে দিন। নতুন ডালপালা বাড়াতে প্রতি দুই মাসে গাছ ছাঁটাই করুন।
🌸ছাদ সাজানোর কৌশল
🌼 রঙিন গাছের প্যাটার্ন তৈরি করুন: চন্দ্রমল্লিকার বিভিন্ন রঙের ফুল দিয়ে ছাদের এক কোণে সুন্দর প্যাটার্ন তৈরি করুন।
🌼 উচ্চতা ভেদে সাজান: পাত্রের উচ্চতা অনুযায়ী চন্দ্রমল্লিকার গাছগুলো সাজান।
🌼 বসার জায়গার চারপাশে রাখুন: ছাদে একটি বসার জায়গা তৈরি করে তার চারপাশে চন্দ্রমল্লিকা রাখুন।
🌼 আলো ব্যবহার করুন: সন্ধ্যায় ছাদের সৌন্দর্য বাড়াতে LED লাইট ব্যবহার করুন।
🌸চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে ছাদ সাজানো শুধু সৌন্দর্য বাড়ায় না, এটি আপনার মানসিক শান্তি ও স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। একটু যত্ন আর পরিকল্পনা করলেই আপনার ছাদ হবে এক সবুজ আর রঙিন আশ্রয়স্থল। এখনই শুরু করুন চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে আপনার ছাদ সাজানোর যাত্রা! 🌼
শহুরে জীবনে একটুখানি প্রশান্তির পরশ পেতে অল্পকিছু হলেও ফুলগাছ লাগান অনেকেই। ছাদ, বারান্দা কিংবা ঘরের কোন দখল করে এই গাছগুলো। তাতে ঘরের সৌন্দর্য তো বাড়েই, সঙ্গে বাড়ে সতেজভাবও। এই শীতে কিছু ফুলগাছ লাগাতে পারেন আপনার শখের বাগানে। চলুন জেনে নেয়া যাক-
এই ফুলগাছগুলো লাগাতে পারেন
গাঁদা শীতকালীন ফুলের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুল হল গাঁদা ফুল। দোআঁশ, এঁটেল, বেলে দো-আঁশ বা পলি মাটিতে গাঁদা ভালো হয়। সূর্যের জোরালো আলোয় এদের ফলন ভালো হয়। দিনে অন্তত পাঁচ-ছয়ঘণ্টা সূর্যের আলো দরকার।
এই ফুলগাছগুলো লাগাতে পারেন
ক্যামেলিয়া অনেকটা গোলাপের মতো দেখতে, তাই ক্যামেলিয়া ফুলকে ‘শীতের গোলাপ’ বলা হয়। এই গাছ না ছাঁটলে প্রায় ২০ ফুট উঁচু হয়ে যায়। এই গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়।
এই ফুলগাছগুলো লাগাতে পারেন
ডালিয়া শীতের সৌন্দর্য বাড়ায় ডালিয়া। লাল, হলুদ, মেরুন বিভিন্ন রঙের এবং বিভিন্ন জাতের হয় এই ফুল। এর আকার, গঠন, পাপড়ির সৌন্দর্য মানুষকে সহজেই মুগ্ধ করে।
এই ফুলগাছগুলো লাগাতে পারেন
ক্যালেন্ডুলা এটি সাধারণত পট গাঁদা হিসেবে পরিচিত এবং এটি বাগানে বা যেকোনো জায়গায় চাষ করা যেতে পারে।। এই ফুলগুলি বিভিন্ন রঙের হয়, যেমন- গাঢ় কমলা, হলুদ ইত্যাদি।
এই ফুলগাছগুলো লাগাতে পারেন
পিটুনিয়া শীতকালীন পরিচিত ফুল পিটুনিয়া। লাল, গোলাপি, সাদা, বেগুনি বিভিন্ন রঙের হয় এই ফুল। গাছ বসানোর পর প্রথম সাত দিন ছায়ায় রাখতে হয়, যেন হালকা রোদ লাগে। নিয়মিত জল দিতে হয় তবে মাটি ভেজা থাকলে পানি না দেয়াই ভালো।
এই ফুলগাছগুলো লাগাতে পারেন
কসমস গোলাপী, সাদা, বেগুনি বিভিন্ন রঙের হয় এই ফুল। সাধারণত এটিকে কসমস বা মেক্সিকান এস্টার বলে ডাকা হয়। কসমস গাছ ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হয়। শীতকালে এই ফুলের চাহিদা অত্যন্ত বেশি থাকে।
এই ফুলগাছগুলো লাগাতে পারেন
চন্দ্রমল্লিকা চন্দ্রমল্লিকা বিঙিন্ন রঙের হয়। চন্দ্রমল্লিকার ফুল সাধারণত ডালপালার তুলনায় বড় হয়। উর্বর বেলে-দোয়াঁশ মাটি এই ফুল চাষের আদর্শ। তবে, এর গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চন্দ্রমল্লিকার টব আগাছামুক্ত রাখা উচিত।
এই ফুলগাছগুলো লাগাতে পারেন
জিনিয়া সুন্দর ও আকর্ষণীয় এই ফুলে কোনো গন্ধ নেই। এটি সাদা, হলুদ, লাল, বাদামী, কমলা, সবুজ বিভিন্ন রঙের হয়। জিনিয়া শীতকালীন ফুল হলেও সারাবছর চাষ করা যায়। দো-আঁশ মাটি এই ফুল উৎপাদনের জন্য বেশি উপযোগী।
ছেলে থেকে বুড়ো সবারই প্রিয় টক ঝাল কদবেল। কদবেলের আচার, কদবেল মাখা সকলেরই অত্যন্ত পছন্দের। যারা বাগান করতে পছন্দ করেন, বিশেষত টবে, তাদের জন্য কদবেল এক আদর্শ ফল। কদবেলের আকার অনেকটা টেনিস বলের মতো। শরতের শুরুতে কদবেল বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই ফলের মন মাতানো স্বাদ বিশেষ করে মহিলাদের ভীষণই পছন্দের।
টবে কদবেল চাষের পদ্ধতি (Farming Process)
মন কাড়া স্বাদের জন্য পাকা কদবেল সবার কাছেই অত্যন্ত প্রিয়। কদবেল গাছে ফুল আসে মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ। তবে ফল পাকতে সময় লাগে সেপ্টেম্বর-অক্টবর। টবে রোপনের জন্য কদবেলের কলমের চারা বেশি ভালো। কলমের চারা থেকে কয়েক বছরের মধ্যে ফুল-ফল ধরে। ছাদের টবে এই গাছের চাষ সহজেই করা যায়। জোড় কলম করে এর কলম তৈরি করা যায়। এ গাছের চাষাবাদ অনেকটা বেলের মতোই।
মাটি তৈরি (Land Preparation)
হাফ ড্রামে অথবা টবে পাঁচ সেন্টিমিটার পুরু করে ইটের খোয়া বিছিয়ে তার ওপর ১০ সেন্টিমিটার বালির স্তর দিতে হবে। ড্রামের তলার দিকে জল বার করে দেওয়ার জন্য ছিদ্র রাখতে হবে। এবার তিন ভাগ দো-আঁশ মাটির সাথে দুই ভাগ গোবর সার, ড্রামপ্রতি ২০০ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার, ২৫০ গ্রাম টিএসপি (ফসফেট) সার, ১ কেজি হাড়ের গুঁড়ো, ৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২০ গ্রাম ম্যাগেনেসিয়াম সালফেট (ম্যাগসাল) সার ও ১০ গ্রাম দস্তা সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ড্রামে বা টবে ভরে হালকা করে জল দিয়ে মাটি ভিজিয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ রেখে দিতে হবে।
ড্রাম বা টবের ঠিক মাঝখানে কদবেলের কলম বসিয়ে কলমের গোড়ার মাটি শক্ত করে চেপে দিতে হবে। কলম লাগানোর পর গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে। সোজা ভাবে কলম রাখতে গেলে, গোড়ার কাছাকাছি কাঠি পুঁতে তার সাথে কলম বেঁধে দিলে ভালো। শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনও সময় কদবেলের কলম লাগানো যায়। ছাদের ওপর রোদের মধ্যে কদবেলের গাছ রাখা উচিত। এতে গাছের ভালোই হবে।
ফলন এবং পরিচর্যা (Caring)
কলমের গাছে ফুল ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নাগাদ আসে। শরৎকালে ফল পেকে যায়। ডালপালা ফল সংগ্রহ করার সময় কিছু ছেঁটে দেওয়া উচিত। এর ফলে পরের বছর ফলন ভালো হবে। কদবেল গাছে ফুল-ফল ভালো আনার জন্য প্রতি বছর ফল তোলা শেষ হলে গাছের গোড়ার মাটিতে ড্রামপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম এমওপি সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার দুই কেজি প্যাকেটের কম্পোস্ট সারের সাথে মিশিয়ে গোড়ার মাটি নিড়িয়ে তার সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।
গাছের বৃদ্ধি ভালো হলে বছরে একবার সার দিলে হবে না। বর্ষাকালের আগেও ঠিক একই ভাবে পুনরায় সার দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে টব বা ড্রামের মাটি যাতে না শুকিয়ে যায়। টবের মাটি কখনো শুকিয়ে গেলে নিয়ম করে সেচ দিয়ে নিতে হবে।
পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, হারিয়ে যাচ্ছে বহু প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র। চাষবাসের জমিরও সংকুলান ঘটছে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে। গগনচুম্বী বাড়ি ঘিরে ফেলছে সমস্ত ফাঁকা জমিন। শখ করে মানুষ খোলা জায়গায় যে গাছ লাগবে অথবা ফল-ফুলের চারা সেই উপায়ও আর নেই। গাছ লাগানোর জন্য সামান্য জায়গাও ফাঁকা থাকছে না আর। তবে আমাদের করণীয় কী? বৃক্ষরোপন কি তবে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। বেঁচে থাকার জন্য তো গাছ লাগাতে হবেই। বাড়ির একটুকরো বারান্দা অথবা ব্যালকনিতেও সুন্দর ভাবে ইচ্ছা করলে গাছ লাগানো যায়। বাড়ির ছাদেও বানানো যায় সুন্দর বাগিচা। শহরের মানুষদের জন্য ছাদ বাগানের কোনও বিকল্পও নেই। বাড়ির মধ্যেকার ব্যালকনি অথবা ছাদের একটুকরো জমিতেও, ইচ্ছা করলে টবে চাষ করা যায় বিভিন্ন ফুলের ও ফলের গাছ।
শাকসবজি, পেয়ারা, লেবু প্রভৃতি দেশীয় গাছ টবে বাড়তে দেওয়া থেকে শুরু করে বর্তমানে বহু বিদেশী গাছের চারাও মানুষ ব্যালকনি অথবা ছাদে চাষ করছেন। তার মধ্যে থাই মিষ্টি তেঁতুল টবের চাষ পদ্ধতি হিসাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। প্রথমত মিষ্টি তেঁতুলের চাষ করতে গেলে, নার্সারি থেকে এই বিশেষ তেঁতুলের সঠিক বীজ নিয়ে আনতে হবে। তবে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কলম পাওয়া একটু দুষ্কর কাজ। বুঝে সঠিক চারা নিয়ে আসা বাগান মালিকের উপরেই বর্তায়।
থাই মিষ্টি তেঁতুলের ফুল থেকে ফল ধরতে প্রায় ৭ মাস সময় লাগে। বছরে দু’বার থাই মিষ্টি তেঁতুলের গাছে ফল ধরে। প্রথমবার বর্ষাকালে এবং দ্বিতীয়বার শীতকালে। এই গাছের পরিচর্যা আলাদা করে করার কোনও দরকার পড়ে না। গাছের যত্নআত্তি নিতে হয় ঠিকই, কিন্তু তা বলে, আলাদা করে কোনও বিশেষ যত্ন নিতে হয় না।
গাছ লাগানোর পদ্ধতি (Planting):
থাই মিষ্টি তেঁতুল চাষের জন্য আদর্শ মাটি হল, দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি। এই দু’টি মৃত্তিকার মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিন। তারপর বেছে নেওয়া মাটির দুই ভাগ অংশের সাথে গোবর, ১০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, পটাশ, ২৫০ গ্রাম, হাড়ের গুঁড়ো এবং ৫০ গ্রাম সরিষার খোল একসঙ্গে মিশিয়ে ২০ ইঞ্চি মাপের বড় টবে জল মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। ১০ থেকে ১২ দিন পর টবের মাটি ভালো করে খুঁচিয়ে দিয়ে আরও ৪-৫ দিন রেখে দিতে হবে। ৪ থেকে ৫ দিন বাদে মিষ্টি তেঁতুলের একটি ভালো চারা ওই টবে লাগান।
পরিচর্যা(Caring):
চারা লাগানোর প্রথম কয়েক মাস তেমন যত্নের দরকার পড়বে না। অবশ্যই গাছে এই সময়টুকু পর্যাপ্ত জলের যোগান, এবং আগাছা পরিষ্কারের কাজ করতে হবে। ছয় মাস চারা লাগানোর সময়সীমা ফুরোলেই ১ মাস বাদে বাদে গাছে সরষের খোল মিশ্রিত পচা জল দিতে হবে। মনে রাখতে হবে খোল দেওয়ার আগে গাছের মাটি খুঁচিয়ে নিতে হবে।
রোগ দমন (Disease management):
সাধারণত থাই মিষ্টি তেঁতুল গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা যায় না। কিন্তু বর্ষাকালে অনেক সময় তেঁতুল গাছে ছত্রাক হানা দেয়। এর ফলে তেঁতুল ফেটে যায়। এই অসুবিধার থেকে গাছকে বাঁচাতে হলে, বর্ষাকাল আসার আগেই ভালো ছত্রাকনাশক ওষুধ ১০ দিন অন্তর গাছে স্প্রে করে ছড়িয়ে দিতে হবে।
বাংলার বেজায় টক তেঁতুলের সঙ্গে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কোনও তুলনাই চলে না। অত্যন্ত মিষ্টি খেতে এই তেঁতুল থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় চাষ প্রভূত পরিমাণে হলেও, আমাদের রাজ্য এই ফলের চাষ এখনও ততটা গতি পায়নি। কিন্তু আপনি আপনার ব্যালকনি অথবা ছাদে সহজেই এই থাই তেঁতুলের গাছ লাগাতে পারেন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন