করোনা ভাইরাস আতঙ্কে গত সপ্তাহে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লেও
চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজ, আলু, ডিম, মুরগিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কমেছে।
শুক্রবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, খিলগাঁও, মালিবাগ ও রমপুরা এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজার ও মানভেদে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪৫
টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭৫-৮০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের
দাম কমে অর্ধেকে নেমেছে।
পেঁয়াজের পাশাপাশি দাম কমেছে দেশি রসুনের। তবে আদা ও আমদানি করা রসুনের
দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত
সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা কেজি। আমদানি করা রসুন আগের মতো ১৭০-১৯০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে। আদা বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা কেজি।
পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল বলেন, করোনা
আতঙ্কে গত সপ্তাহে মানুষ অনেক বেশি বেশি পেঁয়াজ কেনে। এতে দাম বেড়ে যায়।
তবে ভোক্তা অধিদফতর ও র্যাবের অভিযানের পর পেঁয়াজের দাম কমতে থাকে। এখন
দাম কমে গেলেও আগের মতো ক্রেতা নেই।
পেঁয়াজের পাশাপাশি দাম কমেছে গোল আলুর। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়,
মানভেদে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকা। গত সপ্তাহে যা ছিল ২৫-২৮ টাকা।
রামপুরার ব্যবসায়ী মিলন বলেন, করোনা আতঙ্কে পেঁয়াজের মতো আলু কিনেও
অনেকে মজুদ করেছে। গত সপ্তাহে আলু কেনার এক ধরনের হিড়িক পড়ে যায়। যে কারণে
১৮ টাকার আলুর দাম ২৫ টাকা ওঠে। তবে এখন কেনার পরিমাণ কমায় দামও কমেছে।
সামনে হয় আলুর দাম আরও কমতে পারে।
এদিকে করোনা আতঙ্ককে পুঁজি করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী পেঁয়াজ ও আলুর
পাশাপাশি ডিম ও মুরগির দাম বড়িয়ে দিয়েছিল। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিম ও
মুরগি উভয়ের দাম কমেছে।
বাজারে ফার্মের মুরগির লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, যা গত
সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা। আর সাদা ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা, যা গত
সপ্তাহে ছিল ১১০ টাকা। বয়লার মুরগি বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকা
কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা।
মালিবাগের ব্যবসায়ী কালাম বলেন, মুরগি যা মজুদ করার তা ইতিমধ্যে সবাই
করে ফেলেছে। এখন নতুন করে কেউ আমদানি (অতিরিক্ত) মুরগি কিনছে না। ফলে
বিক্রি কমে গেছে। এ কারণে দামও কমেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মুরগির দাম
সামনে আরও কমবে।
এদিকে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ
সবজির দাম স্থির রয়েছে। বাজারে এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে নতুন
আসা সজনের ডাটা। এই সবজিটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা।
করলা আগের সপ্তাহের মতো ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।মাঝারি আকারের লাউ
আগের মত বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পিস। বরবটির কেজি ৪০-৫০ টাকা, যা গত
সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা।
এছাড়া শসা ২০-৩০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, পাকা টমেটো ২০-৪০ টাকা, শিম
৪০-৫০ টাকা, ফুলকপি-বাঁধাকপি পিস ৩০-৩৫ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, শালগম ২৫-৩০
টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, বেগুন ৩০-৪০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি
হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর কাঁচা
মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) আগের মতোই ১৫-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দামের বিষয়ে হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী জহিরুল বলেন, করোনা আতঙ্কে গত
সপ্তাহে পেঁয়াজ, আলুর দাম বাড়লেও কাঁচা সবজির দাম বাড়েনি। এ সপ্তাহেও কোনো
সবজির দাম বাড়েনি। তবে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম।
মালিবাগ বাজার থেকে বাজার করা আসলাম বলেন, করোনা আতঙ্কে গত সপ্তাহে
অনেকেই বেশি করে পেঁয়াজ, আলু, মাছ, মাংস কিনে রেখেছেন। আমার পাশের বাসায়
যারা থাকেন তারও বেশি বেশি কিনে রেখেছেন। কিন্তু আমি কোনো কিছুই মজুদ
করিনি। এখন বাজারে প্রায় সবকিছুর দাম স্বাভাবিক আছে। এটা দেখে স্বস্তি
পাচ্ছি। তবে নতুন করে যাতে কোনো কিছুর দাম না বাড়ে সে জন্য সংশ্লিষ্টদের
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন