করোনার এই সময়েই আসছে ঈদ। ঘরেই হবে ঈদ উদ্যাপন। ঈদের দিন দুপুরে পরিবারের জন্য খাবার টেবিলে থাকতে পারে অন্য রকম কয়েক পদের খাবার। রেসিপি দিয়েছেন কল্পনা রহমান
আদা-লেবু কুলাডা
উপকরণ: সিরাপ ২ কাপ, তাজা লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, আদার রস ২ টেবিল চামচ, বরফকুচি বা আইসক্র্যাম্ব প্রয়োজনমতো ও সোডা ওয়াটার প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: আধা গ্লাস বরফকুচি নিয়ে এর মধ্যে লেবুর রস, সিরাপ ও আদার রস দিয়ে নেড়ে সোডা ওয়াটার দিয়ে গ্লাস ভরে দিতে হবে। সাজিয়ে পরিবেশন।
*সিরাপ তৈরি: ২ কাপ চিনি ও ১ কাপ পানি একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে ছেঁকে ঠান্ডা করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে সিরাপ।
প্রন মিক্সড সালাদ
উপকরণ: ক. ছোট বা মাঝারি চিংড়ি ১ কাপ, পাঁচমিশালি বাদাম ১ কাপ, ডিম ১টা, কর্নফ্লাওয়ার ২ টেবিল চামচ, ময়দা ১ টেবিল চামচ, আদাবাটা আধা চা-চামচ, রসুনবাটা আধা চা-চামচ, সয়া সস ১ চা-চামচ, তেল (ভাজার জন্য) প্রয়োজনমতো, লবণ সামান্য ও ফ্রেশ ক্রিম ২ টেবিল চামচ।
খ. ক্যাপসিকাম (৩ রঙের) ১ কাপ, গাজর স্লাইস আধা কাপ, শসা স্লাইস ১ কাপ, কাঁচা মরিচের কুচি ১ টেবিল চামচ, সাদা গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, থাই চিলি সস সিকি কাপ, টমেটো কেচআপ আধা কাপ, সয়া সস ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ ও লবণ আধা চা-চামচ।
প্রণালি: ক-এর সব উপকরণ একসঙ্গে ম্যারিনেট করে ১০ মিনিট রেখে দিন। এবার একটা একটা করে ডিপ ফ্রাই করে নিতে হবে। বাদামগুলোও সোনালি করে ভেজে নিতে হবে। অন্য পাত্র ২ টেবিল চামচ জলপাই তেল দিয়ে ক্রমান্বয়ে গাজর, ক্যাপসিকাম ও শসা স্লাইস সামান্য স্যতেকরে গোলমরিচ দিয়ে নামাতে হবে। এবার বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে একটি কাঠের চামচ দিয়ে মিশিয়ে পরিবেশনা।
লেমন রাইস
উপকরণ: পোলাওয়ের সেদ্ধ চাল ৫০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল আধা কাপ, লেবুর রস ৪ টেবিল চামচ, লেমন রাইন্ড ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৬-৭টা, বুটের ডাল ২ টেবিল চামচ, মাষ কলাইয়ের ডাল ২ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, কাজুবাদাম আধা কাপ, শুকনা মরিচ ৬টা, কারিপাতা ১ মুঠো, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, কালো শর্ষে ১ চা-চামচ ও আদাকুচি ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: পোলাওয়ের চাল লবণ দিয়ে ঝরঝরা ভাত রান্না করে ঠান্ডা করে রাখতে হবে। একটি ছড়ানো পাত্রে তেল গরম করে শুকনা মরিচের ফোড়ন দিয়ে শর্ষে দিতে হবে। শর্ষে ফুটতে শুরু করলে বুটের ডাল ধুয়ে ঝরিয়ে নিয়ে দিতে হবে। একটু পর কাজুবাদাম, আদাকুচি ও কারিপাতা দিন। ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। ৩-৪ মিনিট দমে রেখে লেমন রাইন্ড ছড়িয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।
*এই রান্না কারিপাতা ছাড়াও করা যাবে।
তন্দুরি ক্রিমি চিকেন
উপকরণ: মুরগির মাংস দেড় কেজি, আদাবাটা ২ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, সয়া সস ১ চা-চামচ, বাদামবাটা ১ টেবিল চামচ, পোস্তদানাবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজবাটা: ২ টেবিল চামচ, শর্ষেবাটা ১ টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল আধা কাপ, তন্দুরি মসলা ১ টেবিল চামচ, কাশ্মীরি মরিচের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, আমের আচার ২ টেবিল চামচ, কমলার জেলি ২ চা-চামচ, ফ্রেশ ক্রিম আধা কাপ, শর্ষের তেল সিকি কাপ ও তরল দুধ ১ কাপ।
প্রণালি: মুরগি ৮ থেকে ১০ টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে কাঁটাচামচ দিয়ে কেচে নিতে হবে। ফ্রেশ ক্রিম ছাড়া সব উপকরণ দিয়ে মুরগির মাংস ম্যারিনেট করে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর মসলা থেকে মুরগি তুলে অল্প তেলে ফ্রাই প্যানে বেশি আঁচে ভেজে নিতে হবে। বাকি মসলাগুলো ১ কাপ পানি দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে এতে মাংস দিতে হবে। এবার ফ্রেশ ক্রিম ও ১ কাপ দুধ দিয়ে নেড়ে মাংসে দিন। দমে ঢাকনা দিয়ে রান্না করতে হবে। যখন তেল উঠে চকচকে হবে, তখন নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
পাঁচমিশালি সবজি
উপকরণ: পটল আধা কাপ, গাজর আধা কাপ, বরবটি আধা কাপ, বাঁধাকপি আধা কাপ, ক্যাপসিকাম আধা কাপ, পেঁয়াজভাজা খোলা ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টা, গুঁড়া দুধ আধা কাপ, আদাকুচি ১ টেবিল চামচ, রসুনকুচি ১ টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল চামচ, চিকেন পাউডার ১ টেবিল চামচ, ডিম ১টা, তেল আধা কাপ, ঘি ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো ও চিনি ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: সবজি সামান্য লবণ দিয়ে আধা সেদ্ধ করে নিতে হবে। কর্নফ্লাওয়ার, ডিম ও দুধ ২ কাপ পানি দিয়ে মিশিয়ে রাখতে হবে।
এবার একটি প্যানে তেল গরম করে আদা ও রসুনকুচি ভেজে ভাঁজখোলা পেঁয়াজ দিতে হবে। পেঁয়াজ চকচকে হলে মুরগি, চিকেন পাউডার, কাঁচা মরিচ ও চিনি দিয়ে ২-৩ মিনিট ভালোভাবে নেড়ে সেদ্ধ সবজিগুলো দিয়ে দুধের মিশ্রণ দিয়ে ঢেকে রান্না করতে হবে। সব উপকরণ সেদ্ধ হয়ে মাখা মাখা হলে ১ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে ২ মিনিট পর নামিয়ে পরিবেশন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন