ভালো নেই মানবকুল, ভালো আছে প্রাণ-প্রকৃতি। সারা বিশ্ব থমকে আছে করোনাকালে। ইটভাটাসহ বন্ধ রয়েছে কলকারখানা। সড়কে মানুষের চলাচলও সীমিত। শহর কিংবা গ্রাম—সর্বত্রই দূষণে বাতাস ছিল ভারী। এই সময়ে প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র, পাহাড়, নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়ে নেই মানুষের হইহুল্লোড়। বেড়াতে আসা মানুষের চাপ নেই প্রকৃতিতে। শুরু হয়ে গেছে বর্ষাকাল। করোনাকালে মানুষ যখন দিশেহারা, ঠিক তখন প্রকৃতি তার নিজের ছন্দে ফিরছে। চলতি পথে ফোটা ফুলে মৌমাছির ওড়াউড়ির দেখা মিলছে। শহুরে জীবনে এনে দিয়েছে শান্তির উপসর্গ।
বাড়ির দেয়াল ঘেঁষে বেয়ে উঠেছে নয়নতারা ফুল। পাঁচতলা এই বাড়ির ছাদে ঘুঘুর দেখা মিলল। রোববার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপু
নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন কলকারখানার বর্জ্যে শীতলক্ষ্যা নদীর পানি ধূসর হয়ে থাকে। লকডাউনের কারণে কারখানা বন্ধ। বর্ষায় প্রবেশ করেছে নতুন পানি। প্রাণ ফিরে পেয়েছে নদীটি। গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জের ১ নম্বর খেয়াঘাট এলাকায়।
কলকারখানা বন্ধ ছিল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে। সড়কে যানবাহনও চলেনি। শুরু হয়েছে বর্ষা মৌসুম। বাতাসে দূষণের মাত্রা কমে গেছে অনেকখানি। চারদিকে যেন সবুজের প্রদর্শনী। রোববার রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায়।
সড়কে যান চলাচল কম, ধুলাবালুও। ফাঁকা সড়ক বিভাজকে গাছে গাছে রঙিন ফুলের সমারোহ। প্রকৃতি যেন মেলে ধরেছে তার অপরূপ সৌন্দর্য। সম্প্রতি রাজধানীর কাকরাইল এলাকায়
করোনার কারণে বন্ধ বিনোদনকেন্দ্রগুলো। প্রাকৃতিক পরিবেশে উন্মুক্তভাবে বড় হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা তিনটি হোয়াইট পেলিক্যান। বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায়।
যান চলাচল লকডাউনে বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। শুরু হয়েছে বর্ষা মৌসুম। টানা বৃষ্টিতে ধুয়েমুছে গেছে পাতায় জমে থাকা ধুলার আবরণ। সড়ক বিভাজকে নতুন পাতার ভাঁজে ভাঁজে শোভা পাচ্ছে রঙ্গন ফুল। গতকাল রাজশাহী নগরের ঐতিহ্য চত্বর এলাকায়।
দীর্ঘদিন করোনার প্রভাবে সড়কে যান চলাচল করেনি। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে বর্ষা মৌসুম। গাছপালা মেলে ধরেছে তার সৌন্দর্য। ফুলে ছেয়ে থাকা পার্কের পথে হেঁটে যাচ্ছেন এক পথচারী। রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
পাহাড় কাটা হয়েছে লকডাউনের মধ্যে। সেখানে বাসা বেঁধেছে সুইচোরা পাখিরা। গত শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোড এলাকায়
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন